উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম বিশ্বজিৎ চন্দ (৩৫)। পরিবারের অভিযোগ, ইমার্জেন্সি থেকে ওয়ার্ডে স্থানান্তরের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এবং ট্রলির জন্য দীর্ঘ ঘণ্টার অপেক্ষা ও অনৈতিক অর্থ দাবি করা হলে কার্যত রোগী চিকিৎসা ছাড়া হাসপাতালে মারা যান।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ফের র্যাগিং, বিক্ষোভ, ফিরতে হল রোগীদের, ব্যাহত পরিষেবা
পরিজনদের বক্তব্য অনুযায়ী, বিশ্বজিতের স্বাস্থ্যগত অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বাগডোগরার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার অ্যাম্বুল্যান্সে ইমার্জেন্সিতে পৌঁছে, কর্তৃপক্ষ ইমার্জেন্সি থেকে জানায় যে ওয়ার্ডে ভর্তি করাতে হবে। কিন্তু রোগী চলাফেরার অবস্থায় না থাকায় পরিবারকে ট্রলি ব্যবস্থার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। পরিবারের দাবি, প্রায় দেড় ঘণ্টার বেশি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও ট্রলি দেওয়া হয়নি। একজন কর্মী ঘরের বাইরে এসে ট্রলির জন্য ২০০ টাকা দাবি করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বিশ্বজিতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বাধ্য হয়ে বাবা গোপাল চন্দ তাঁর ছেলেকে পিঠে নিয়ে ওয়ার্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ট্রলির ঘর থেকে ব্লাড ব্যাঙ্কের দিকে যাওয়ার সময়ই বিশ্বজিতের মৃত্যু ঘটে।
বিশ্বজিতের মৃত্যুতে তার আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ দেখান। মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিশ দেহটি ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যায়। গোপাল চন্দ পুলিশকে জানান, গাফিলতিতে তাঁর ছেলে মারা গেছে। চিকিৎসার কাগজপত্র দিতে হবে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দিতে চাইছেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেহ এবং কাগজপত্রের বিষয়টি নিয়ে দেরি হয়। পরে পুলিশ চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পরিষেবা নিয়ে ফের প্রশ্ন ওঠেছে। কেন গুরুতর রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়নি? কেন ইমার্জেন্সি থেকে ট্রলি বা স্ট্রেচারের ব্যবস্থা না করে রোগীকে ওয়ার্ডে পাঠানো হলো? সরকারি হাসপাতালে সেবা নেওয়ার সময় কেন টাকা দাবির ঘটনা ঘটল, তা নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ডেপুটি সুপার সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ইমার্জেন্সি বিভাগে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কেন রোগীকে ছাড় দেওয়া হলো, তা জানা নেই। ট্রলির জন্য টাকা দাবিও মেনে নেওয়া হবে না। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত চালাব এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।