দুর্গোৎবের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বছরের বাকি সময়ে তিনি থাকেন সংগঠন আর রাজনীতির কাজে ব্যস্ত। তবে পুজোর ক’টা দিন কাটান একেবারেই ভিন্ন আবহে। মধ্যমগ্রামের দিগবেড়িয়ায় তাঁর বাড়ির ৩৩৩ বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো। এই পুজো শুধু পারিবারিক ঐতিহ্য নয়, রাজনৈতিক মহলেও যথেষ্ট নজর কাড়ে। দলীয় নেতা-মন্ত্রীরা থেকে কর্মী, সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয় প্রতি বছরই। কিন্তু এবারের পুজোয় তৃণমূল সাংসদের এক ফেসবুক পোস্টে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘এখানকার মহিলাদের বলছি, মুড়ো ঝাঁটা নিয়ে তৈরি থাকবেন’, স্বপনকে বিঁধলেন কাকলি
পঞ্চমীর দিন নিজের বাড়ির প্রতিমার সঙ্গে ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘সবাইকে শারদ শুভেচ্ছা জানাই। অসুর নিধনকারী মা আমার আরাধ্য দেবী। যারা আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে, মা তাঁদের ধ্বংস করবেন। আমি জেনে-শুনে কোনও অন্যায় করিনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার পাশে থাকলে আমায় কেউ হারাতে পারবে না।’
সাংসদের এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে। দ্রুত শেয়ার হতে শুরু করে, সঙ্গে তৈরি হয় নানা ব্যাখ্যা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সম্প্রতি বারাসত সাংগঠনিক জেলার নতুন ব্লক ও টাউন নেতৃত্ব গঠনের পর কিছু অন্দরের অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটেই হয়তো এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন কাকলি দেবী।
তবে নিজেকে ঘিরে ওঠা জল্পনা নিয়ে তিনি পরিষ্কার করেছেন, এটা শুধুই মা দুর্গার কাছে তাঁর প্রার্থনা। যাঁরা বিরোধী রাজনীতি করে তাঁকে হারাতে বা ক্ষতি করতে চেয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশেই এই বার্তা। যে দলটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মহীরুহ করেছেন, সেই দলের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস তাঁর নেই। তিনি দলের পতাকা নিয়েই বাঁচবেন-মরবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পুজোর আবহে এমন মন্তব্য বিরল হলেও এর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সাংগঠনিক অন্দরের টানাপোড়েনের ইঙ্গিত। তবে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছে, এটা নিছক ব্যক্তিগত ভক্তি ও আবেগের প্রকাশ, এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা বাড়াবাড়ি।