শহরে দুর্গাপুজো মানেই দর্শনার্থীদের ঢল। সেই ভিড় সামলাতে বড় মণ্ডপগুলিতে বিশেষ পাস দেওয়া হয় অতিথিদের জন্য। অথচ সেই পাসকেই কেন্দ্র করে এ বার বড়সড় প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ভুয়ো পাস বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করছে এক অসাধু চক্র। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরগরম পুজো মহল। এদিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, মণ্ডপ বন্ধ করে দিলেন মহম্মদ আলি পার্কের পুজো উদ্যোক্তারা।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের সবথেকে পুরনো দুর্গাপুজো! ৯৬ বছরে পা বম্বে দুর্গা বাড়ি সমিতির পুজো
শুক্রবার রাতে হাতিবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপে এক যুবক ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের পাস দেখিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাস দেখে সন্দেহ জাগে আয়োজকদের। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি সেই পাস কিনেছেন ৬০০ টাকায়, এক অনলাইন পরিচিতির কাছ থেকে। অথচ এই ধরনের পাস একেবারেই বিনামূল্যে দেওয়া হয় এবং কেবলমাত্র আমন্ত্রিতদের জন্যই বরাদ্দ। এরপরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের নাম ভাঁড়িয়ে ভুয়ো পাস ছাপিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করছে এক চক্র। অনেকে প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক সংস্থা সতর্কতামূলক বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পুজোর পাস কেনাবেচা সম্পূর্ণ বেআইনি। কেউ এমন কাজে যুক্ত থাকলে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ হবে।
ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের অন্যতম কর্তা শাশ্বত বসু জানান, পুজোর পাস নিয়ে যে প্রতারণা চলছে তা নজরে এসেছে। ইতিমধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানানো হবে।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ মেলেনি। অভিযোগ এলেই তদন্ত শুরু হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে, এমন কোনও ভুয়ো পোস্ট দেখলে দ্রুত পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, মোহাম্মদ আলি পার্কে পুজোকে ঘিরে আরও এক বিতর্ক শুরু হয়েছে। উদ্যোক্তারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে দর্শনার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে শনিবার রাতে গোটা মণ্ডপে আলো নিভিয়ে মণ্ডপ বন্ধ করে দেন উদ্যোক্তারা। দর্শনার্থীদের জন্য পুজো মণ্ডপ বন্ধ করা হয়।
তবে পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, কোনও রাস্তা বন্ধ করা হয়নি। দর্শনার্থীরা কলেজ স্কোয়ার থেকে এমজি রোড হয়ে সহজেই মহম্মদ আলি পার্কে পৌঁছতে পারেন। পুলিশ কাউকে জোর করে ঘুরিয়ে পাঠাচ্ছে, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। ফলে, একদিকে পুজোর পাস নিয়ে প্রতারণার জাল, অন্যদিকে মোহাম্মদ আলি পার্কে প্রবেশপথকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দুর্গোৎসবের মরশুমে আরও সরগরম হয়ে উঠেছে।