রামপুরহাটের নাবালিকা ছাত্রী খুনের নৃশংস ঘটনায় মাত্র দশ দিনের মধ্যেই চার্জশিট পেশ করল পুলিশ। শুক্রবার সকাল থেকে রামপুরহাট আদালত চত্বর ছিল কড়া প্রহরায় মোড়া। অভিযুক্ত শিক্ষককে এদিন সকালেই আদালতের হাজতে আনা হয়। দুপুরে এডিজে কোর্টে মামলার শুনানি চলে। পকসো আইনের অপহরণ, ধর্ষণ, খুন, দেহ লোপাট এবং এসসি-এসটি অ্যাক্টের একাধিক ধারা যুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুনের পর ছাত্রীর শিরা কেটে রক্ত শূন্য করার চেষ্টা, রামপুরহাট কাণ্ডে নয়া তথ্য
অভিযুক্তর হয়ে লিগ্যাল এইডের আইনজীবী দাঁড়ালেও রাজ্যের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, আদালত অভিযুক্তকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। পুজোর মধ্যেই ফরেনসিক ল্যাব থেকে আরও কিছু তথ্য আনার চেষ্টা চলছে।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ থেকে ৩০ অগস্টের মধ্যে খুনটি সংঘটিত হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধরা পড়েছে, হত্যাকাণ্ড হয়েছে ময়নাতদন্তের ২১ থেকে ২৮ দিন আগে। প্রসিকিউশন পক্ষের দাবি, অপহরণের একদিন পরই খুন করা হয়েছিল ছাত্রীকে। শুধু তাই নয়, তা ঘটেছে নৃশংসভাবে। বিভাসবাবুর কথায়, অভিযুক্ত শিক্ষক প্রথমদিকে তদন্তকারীদের ঘোল খাওয়ানোর চেষ্টা করে। পরে ভেঙে পড়ে স্বীকারোক্তি করেন। তখনই দেহাংশ উদ্ধার সম্ভব হয়। সকলেই চায়ছেন দ্রুত বিচার হোক। আদালতের কাছে সর্বোচ্চ সাজা দাবি করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, আপাতত অন্য কারও জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। খুনের সঠিক কারণ অবশ্য খোলসা করেননি তিনি।
আদালত সূত্রে খবর, এখনও নিখোঁজ রয়েছে ছাত্রীর দেহের নিম্নাংশ। তবে অভিযুক্তর ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে খুনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত ধারালো চপার। প্রসিকিউশন পক্ষের বক্তব্য, আংশিক দেহাংশ উদ্ধার হলেও খুন প্রমাণ করা যায়। এরইমধ্যে মৃতার গ্রাম থেকে আসা মানুষজন আদালত চত্বরে ফাঁসির দাবিতে স্লোগান তুলেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বীরভূমের এসপি আমনদীপ জানান, বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেই দ্রুত চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট আসার অপেক্ষা চলছে, প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। দেহাংশ উদ্ধারে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। একইসঙ্গে প্রথমদিকে মামলার তদন্তে গাফিলতি হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক মহিলা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে।