পঞ্চমীর রাতে উৎসবের আবহে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। শ্যামনগর রেলস্টেশনে গৌড় এক্সপ্রেসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মা, শিশু ও এক ফল বিক্রেতার। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়রা। লেভেল ক্রসিংয়ে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে এক মহিলা তাঁর শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে লাইন পার হচ্ছিলেন। হঠাৎ শিশুটি হাত ফসকে তিন নম্বর লাইনে পড়ে যায়। প্রাণের টানে মা ঝাঁপিয়ে পড়েন সন্তানের পিছনে। ঠিক তখনই ছুটে আসে গৌড় এক্সপ্রেস। অসহায় পরিস্থিতি দেখে মা-শিশুকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন স্টেশনের এক ফল বিক্রেতা। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে ধাক্কা মারে ট্রেন। তিনজনই ছিটকে পড়েন লাইনের ধারে। অত্যন্ত গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, লেভেল ক্রসিংয়ের গেট দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে ঢুকতে পারেনি। বাধ্য হয়ে আহতদের কোলে করে কিছুটা পথ হেঁটে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাসপাতালে পৌঁছলেও কাউকেই বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। শ্যামনগর স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে থাকে অবরোধ।
অভিযোগ, গেটম্যান সময়মতো গেট খোলেন না, ফলে দুই প্রান্তে জমে থাকে ভিড়। এরফলে মানুষ অধৈর্য হয়ে সরাসরি লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করেন, যা মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বহুবার অভিযোগ জানানোর পরও রেল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি বলেই দাবি তাঁদের। অবশেষে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। কিন্তু এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর ফের প্রশ্ন উঠছে, রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর ঢাকতে কেন এত গাফিলতি? বারবার অভিযোগ জানিয়েও কেন বদলায় না পরিস্থিতি? শারদোৎসবের মাঝেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় নেমে এনেছে শোকের ছায়া।