২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে চারদিন ধরে টানটান আন্দোলনের পর অবশেষে তালা ঝুলল সুবর্ণপুর চা বাগানের অফিসে। শুক্রবার সকালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাগানের শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ যেখানে ১৩.৭৫ শতাংশ বোনাস দিতে রাজি হয়েছে, সেখানে শ্রমিকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২০ শতাংশের কমে তাঁরা মানবেন না। ফলে উৎসবের মরশুমে আরও একটি চা বাগানে তালা ঝুলল।
আরও পড়ুন: মহালয়ার আগেই উত্তরবঙ্গে খুশির হাওয়া, ১৭০টি চা বাগানে দেওয়া হল শ্রমিকদের বোনাস
ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১৫০ একর জুড়ে বিস্তৃত সুবর্ণপুর চা বাগান। এখানে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ১৬৯। রাজ্য সরকারের ঘোষণার ভিত্তিতে শ্রমিকরা ২০ শতাংশ বোনাসের প্রত্যাশায় ছিলেন। কিন্তু গত সোমবারই ম্যানেজমেন্ট চিঠি দিয়ে জানায়, তারা ১৩.৭৫ শতাংশ বোনাস দেবে। এর পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সেই আন্দোলন চতুর্থ দিনে পৌঁছতেই তালা ঝুলল বাগানের গেটে। শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মঙ্গলবার থেকে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন। আজও বোনাস মেলেনি। বাধ্য হয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই বাগানে কাজ করা শ্রমিকদের বক্তব্য, কেউ ২৮ বছর আবার কেউ ২০ বছর ধরে এই বাগানে আছেন। এ বার ২০ শতাংশ বোনাস না পেলে অন্যায়ের শিকার হবেন। তাঁদের দাবি ন্যায্য।
অন্যদিকে, একই দাবিতে এদিন দুপুরে নাগেশ্বরী চা বাগানের শ্রমিকরাও মেটেলি যাওয়ার রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ধর্নায় বসেন। তাঁদের স্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। যদিও বাগান কর্তৃপক্ষ ভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেছে। সুবর্ণপুর চা বাগানের ম্যানেজার রিয়াজ চৌধুরী জানান, ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে শ্রমিক ইউনিয়নগুলির উপস্থিতিতেই চুক্তি হয়েছিল ৫০ একরের ঊর্ধ্বে যেসব বড় বাগান, সেখানে ১৩.৭৫ শতাংশ বোনাস দেওয়া হবে। এটা বড় বাগান নয়, তাই নিয়ম মেনেই বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শ্রমিকরা সেই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন। তাঁদের বক্তব্য, যাই হোক না কেন, সরকারি নির্দেশ অনুসারে ২০ শতাংশ বোনাস না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ফলে, পুজোর মুখে চা বাগানজুড়ে এখন উত্তেজনার আবহ। প্রশাসন মনে করছে, শ্রমিকদের দাবি ও মালিকপক্ষের অবস্থান নিয়ে আলোচনায় বসা জরুরি হয়ে পড়েছে, নইলে অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।