দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে সীমান্তবর্তী কড়া নজরদারি হওয়া সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা থামছে না। ফের ভারতে অনুপ্রবেশ করল দুই বাংলদেশি। কোচবিহারের হলদিবাড়ি ব্লকের পারমেখলিগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের ঝাড়সিংহাসন এলাকার সীমান্তগ্রামবাসীরা তিস্তা নদীর উন্মুক্ত সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ার সন্দেহে দুইজনকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। জানা যাচ্ছে, দুজন পুজো দেখতে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিল।
আরও পড়ুন: কালীঘাটে ধৃত বাংলাদেশি কীভাবে পেলেন ‘খাঁটি ভারতীয়’ ড্রাইভিং লাইসেন্স?
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটে রাতের অন্ধকারে। দুজনে বাইকে করে যাচ্ছিল। চালক ও সওয়ারিদের অচেনা দেখেই গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। তারা দুজনকে থামানোর চেষ্টা করে। তখন তারা বাইকের গতি বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করলে লোকজন পিছু ধাওয়া করে দু’জন সওয়ারিকে ফেলে। গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় খবর যায় হলদিবাড়ি থানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম দশরথ রায় (২৭) ও কালীদাস রায় (৫০)। তারা বাংলাদেশে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বাসিন্দা বলে দাবি পুলিশের। ধৃতদের কাছ থেকে কিছু ভারতীয় মুদ্রা ও একটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাদের হলদিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তাদের হাজির করা হলে আদালত চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। তাঁদের বক্তব্য, এখানেই তিস্তার উন্মুক্ত অংশ। সেখানে থেকেই অনেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসে। বারবার এ রকম ঘটনা ঘটছে, তাই গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক নেতার ও বিভিন্ন সংগঠন সরব। উত্তরবঙ্গের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কনডিনেটর পাঞ্চালী দেব শিকদার নাগ ঘটনাস্থল দেখার পর বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে আচরণ চলে, সেটি তাঁদের নজরে এসেছে। অনেকে ধর্মীয় উৎসব করতে না পেরে সীমান্ত পেরিয়ে এখানে আসার চেষ্টা করেছে। আইন বিরুদ্ধভাবে অনুপ্রবেশ করা ঠিক নয়। কিন্তু যে দেশে নিপীড়ন হয়, তারা সঙ্গত কারণ দেখিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব চান। সিএএ এর মাধ্যমে তাদের নাগরিকত্ব নেওয়ার পথ খোলা রয়েছে। তাঁদের বক্তব্যে অনেকে সমর্থন না করে বলছেন, সীমান্ত সুরক্ষা কঠোর করা প্রয়োজন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে ধৃতরা কি কোনও চক্রের অংশ? কী উদ্দেশ্যে এসেছিল তা সবই খতিয়ে দেখা হবে।