অবশেষে স্বস্তির খবর রিয়েল এস্টেট বাজারে। হঠাৎ প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাওয়া সার্কল রেটের জেরে ফ্ল্যাট, জমি ও বাড়ি কেনাবেচায় অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের বোঝা চেপে বসেছিল ক্রেতাদের উপর। দীর্ঘদিন ধরে আপত্তি ও আবাসন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবির পর রাজ্য সরকার সেই সার্কল রেটে আংশিক সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভারতীয় ব্যবসায়ীরাই চাপ দেবেন মোদীকে’,শুল্ক ইস্যুর মাঝে নয়া দাবি US সচিবের
সার্কল রেট আসলে সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্য। এই রেটের উপর ভিত্তি করেই ধার্য হয় স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের খরচ। ফলে হঠাৎ রেট বাড়ায় অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তব বাজারদরের চেয়েও বেশি খরচ বহন করতে হচ্ছিল সাধারণ ক্রেতাদের। নতুন সংশোধন অনুযায়ী, বনহুগলি (বিটি রোড) এলাকায় যেখানে আগে সার্কল রেট ৮৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল, তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ শতাংশে। সল্টলেক লাগোয়া মহিষবাথানে ৮৭ শতাংশ থেকে নামিয়ে করা হয়েছে ৫৪ শতাংশ।
দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধিকে কমিয়ে ৫২ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যদিকে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত বেহালা সরশুনা এবং নিউ টাউনে নতুন করে সার্কল রেট নির্ধারণ করা হবে। তবে টালিগঞ্জের সিরিটি, মহাবীরতলা বা বিএল সাহা রোডের মতো কিছু অঞ্চলে এখনও কোনও সংশোধন হয়নি। অর্থ দফতরের সূত্র বলছে, মহিষবাথানে সর্বাধিক হ্রাস ঘটেছে প্রতি বর্গফুটে প্রায় ৩,৪৬৩ টাকা কমানো হয়েছে। তপসিয়ায় কমেছে ২,৮১৪ টাকা, বনহুগলি বিটি রোডে ২,৪৭৫ টাকা এবং বেহালা সরশুনায় ২,০০১ টাকা। এর ফলে সরাসরি আর্থিক সাশ্রয় হবে ফ্ল্যাট ও জমি ক্রেতাদের। এক প্রোমোটার সংস্থার কর্ণধার জানিয়েছেন, সার্কল রেট যদি বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারিত হয়, তাহলে সকলের পক্ষেই সুবিধা হবে। বিশেষ করে জমির দামে সরকারি রেট বাজারমূল্যের তুলনায় বেশি হয়ে যাচ্ছিল। সেই বিষয়টিও কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
আবাসন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির মতে, এই সংশোধন মধ্যবিত্ত গৃহক্রেতাদের বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে। গৃহঋণের পাশাপাশি অতিরিক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশনের খরচ সামলাতে না পেরে যাঁরা সমস্যায় পড়েছিলেন, তাঁদের জন্য এটি উল্লেখযোগ্য স্বস্তির সিদ্ধান্ত। তবে এখনও যেসব এলাকায় সংশোধন হয়নি, সেখানে তাদের দাবি বহাল থাকবে বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
এদিকে, নবান্ন সূত্রে খবর, আংশিক ছাড় দেওয়ার পরও রিয়েল এস্টেট লেনদেন বাড়ায় রাজ্যের রাজস্ব আয় একাধিক গুণ বাড়বে বলে আশাবাদী রাজ্যের অর্থ দফতর। এক আধিকারিক বলেন, অতিরিক্ত চাপ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিল। আলোচনা করে অবশেষে বহু এলাকায় ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ক্রেতা ও রাজ্য দুই পক্ষেরই লাভ হবে।