মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষ কর্মীদের জন্য জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসার ফি বিপুল পরিমাণে বাড়ানোর সিদ্ধান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রযুক্তি ক্ষেত্র-সহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি কর্মীদের জন্য নিজেদের দরজা খুলে দিচ্ছে কানাডা। এর ফলে ভারতীয়দের উপর উল্লেখযোগ্যভাব প্রভাব পড়বে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, কানাডার অভিবাসন ব্যবস্থাতেও রয়েছে নিজস্ব চ্যালেঞ্জ। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতি পরিবর্তনের ফলে যে সব দক্ষ কর্মী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমুখ হচ্ছেন, তাদের টানতে আগ্রহী কানাডা। শনিবার লন্ডনে সব্জিবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্নি বলেন,' এবার স্পষ্ট হল যে, যারা আগে তথাকথিত এইচ-১বি ভিসা পেয়েছেন, তাদের আকর্ষণ করার সুযোগ।' তিনি আরও বলেন, কর্মীদের অনেকেই প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আছেন এবং তারা কাজের জন্য অন্যত্র যেতে আগ্রহী। বর্তমানে কানাডিয়ান সরকার এই ধরণের প্রতিভাকে কাছে টানার চেষ্টা করছে এবং এতে প্রস্তাব স্পষ্ট থাকবে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এইচ-১বি আবেদনের জন্য ফি এক লাখ ডলার নির্ধারণের ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তে প্রযুক্তি সংস্থাগুলি বেশ অবাক হয়েছে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি কর্মী নিয়োগে তারা এই কর্মসূচির ওপর নির্ভরশীল। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এইচ-১বি ভিসাধারীরা এতে প্রভাবিত হবেন না। তবে এই পরিবর্তনে উচ্চশিক্ষিত বিদেশি চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ সীমিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।এদিকে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ভারতীয় কর্মীরা। গত বছর ভারত থেকে ৭১ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই আছে চিন। সেখান থেকে ১১.৭ শতাংশ ভিসার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ভিসানীতির এই বিরাট পরিবর্তনের ফলে ভারতীয় নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই পরিস্থিতিতে কানাডার সামনে নতুন এক দরজা খুলছে বলে মনে করছেন অনেকে। কানাডা ভিত্তিক অভিবাসন আইনজীবী ইভান গ্রিন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ হারানো কর্মীরা এখন অন্য দেশের দিকে তাকাচ্ছেন। এটি 'কানাডা সরকারের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।' অতীতেও এমন নজির দেখা গেছে। ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের ২০২০ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখনই দক্ষ কর্মীদের অভিবাসন নীতি কঠিন করেছে, বহুজাতিক সংস্থাগুলি প্রতিভা ধরে রাখতে কানাডা, ভারত বা চিনের দিকে ঝুঁকেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী,অ্যামাজন.কম ইন, মাইক্রোসফট কার্প, আলফাবেট ইন-এর মতো টেক জায়ান্টদের কানাডার প্রধান শহরগুলিতে অফিস রয়েছে এবং তারা মার্কিন ফি এড়িয়ে সেখানে কর্মী নিয়োগ ত্বরান্বিত করতে পারে। এক বছর আগে পর্যন্ত, অ্যামাজনের ভ্যাঙ্কুভার এবং টরন্টোর টেক হাবগুলিতে ৮,৫০০-এরও বেশি কর্পোরেট এবং প্রযুক্তি কর্মী ছিল এবং এপ্রিল পর্যন্ত মাইক্রোসফটের ভ্যাঙ্কুভারের একটি ডেভেলপমেন্ট হাবে ২,৭০০ কর্মী ছিল।