ভারত সরকারের প্রচেষ্টাতেই কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বোধনের দিনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি আগামী ২ অক্টোবর, বিজয়া দশমীর দিন ১০০ বছর পূর্ণ করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। এর জন্য সংগঠনটিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-ভোটমুখী বিহারে বড় ‘প্রতিশ্রুতি!’ ছট পুজো নিয়ে বড় পরিকল্পনার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান 'মন কি বাত'-এর ১২৬তম সংস্করণে বলেছেন, ভারত সরকার ছট মহাপর্বকে ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করার জন্য কাজ করছে। ছট পুজো প্রসঙ্গে বলতে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলার দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ছট শুধু ভারতের নানা প্রান্তে নয়, গোটা বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হয়। ছট পুজোকে ইউনেস্কোর অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। সূর্য দেবতার এই পুজো এখন বিশ্বের নানা দেশে পরিচিতি পাচ্ছে। কিছুকাল আগে ভারত সরকারের এই রকম প্রয়াসের কারণেই কলকাতার দুর্গাপুজো বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’ বলে রাখা ভালো, কলকাতার দুর্গাপুজোর এই স্বীকৃতি পাওয়ার কৃতিত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারও দাবি করে। ২০২১ সালে কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। যদিও সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, এই স্বীকৃতি পাওয়ার কৃতিত্ব তাঁর সরকারের। সেই সময় কেন্দ্র না রাজ্য, কার প্রচেষ্টায় কলকাতার দুর্গাপুজো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছিল। তবে রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্পষ্ট করে দিলেন, কলকাতার দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তির কৃতিত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নয়, কেন্দ্রের। ঘটনাচক্রে প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ পুজোর মধ্যেই সম্প্রচারিত হওয়ায় বিষয়টি আলাদা মাত্রা পেয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
আরও পড়ুন-নয়া খেলায় মত্ত পাকিস্তান! ট্রাম্পকে খুশি করতে শাহবাজ-মুনিরের 'খনিজ' কৌশল
১২৬তম ‘মন কি বাত’ ভাষণে প্রায় আড়াই মিনিট ধরে আরএসএসের ১০০ বছরের অসাধারণ, অভূতপূর্ব, অনুপ্রেরণামূলক যাত্রার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর কথায়, 'এই বিজয়া দশমী আরেকটি কারণে খুবই বিশেষ। এই দিনটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি। এক শতাব্দীর এই যাত্রা যতটা আশ্চর্যজনক, অভূতপূর্ব এবং অনুপ্রেরণাদায়ক, ততটাই আশ্চর্যজনক। ১০০ বছর আগে, যখন আরএসএস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, দেশ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। এই শতাব্দীর দীর্ঘ দাসত্ব আমাদের আত্মসম্মান এবং আত্মবিশ্বাসকে গভীরভাবে আঘাত করেছিল। বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতা একটি পরিচয় সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। আমাদের নাগরিকরা হীনমন্যতার জটিলতার শিকার হচ্ছিল। ত্যাগ ও সেবার চেতনা এবং শৃঙ্খলার শিক্ষাই সংঘের আসল শক্তি। আজ, আরএসএস একশ বছর ধরে অক্লান্তভাবে এবং অবিরামভাবে জাতির সেবায় নিযুক্ত রয়েছে। এই কারণেই আমরা দেখতে পাই যে, যখনই দেশের কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, তখনই আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবকরা প্রথমে সেখানে পৌঁছান। লক্ষ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবকের জীবনের প্রতিটি কর্ম এবং প্রতিটি প্রচেষ্টায় জাতি প্রথমে এই চেতনা সর্বদা সর্বাগ্রে থাকে। জাতির সেবার মহান যজ্ঞে নিজেকে উৎসর্গকারী প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবককে আমি আমার শুভেচ্ছা জানাই।'