ফের বিতর্কের কেন্দ্রে বিশ্বভারতী। শান্তিনিকেতনের প্রবেশপথে চারটি বিশাল তোরণ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। এবার সরাসরি সংঘাতে জড়াল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ত দফতর। অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই পূর্ত বিভাগের জমিতে নির্মাণ শুরু করেছে বিশ্বভারতী।
আরও পড়ুন: পুজোর আগে হকার উচ্ছেদের নোটিশ, ফের বিতর্কে বিশ্বভারতী, জোর রাজনৈতিক তরজা
শনিবার বোলপুর পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা পরিদর্শনে গিয়ে জানান, যে জায়গায় কাজ চলছে সেটি পূর্ত দফতরের আওতায়। বিশ্বভারতীর ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে অনুমতির কাগজ চাইলে তাঁরা কোনও নথি দেখাতে পারেননি। এরপরেই নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়। আধিকারিকরা আরও জানান, এই বিষয়ে রাজ্য সরকার, জেলা প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, নয়া উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ শান্তিনিকেতনকে পর্যটকদের কাছে নতুনভাবে উপস্থাপন করার পরিকল্পনায় প্রবেশপথে চারটি তোরণ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। একটি দমকল দফতরের সামনের রাস্তায়, দ্বিতীয়টি শান্তিনিকেতন রোডে কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেটের কাছে, তৃতীয়টি শ্যামবাটি বাজার লাগোয়া এলাকায় এবং চতুর্থটি কালিসায়র মোড়ে।
এর মধ্যে শান্তিনিকেতন রোডে রতনকুঠি গেস্ট হাউস সংলগ্ন পূর্ত দফতরের রাস্তার দু’পাশে ইতিমধ্যেই রড-সিমেন্টের কাজ শুরু হয়েছিল। একইভাবে কবিগুরু মার্কেটের কাছে খোঁড়াখুঁড়ি চলছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আপত্তি তুললে কাজ থেমে যায়।
এর আগেও উপাচার্যের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পূর্বপল্লীর তিনটি খেলার মাঠ ট্রাক্টর দিয়ে চষে দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। এবার সেই তালিকায় যোগ হল তোরণ নির্মাণের ঘটনা।
বিশ্বভারতীর একাংশ দাবি করছে, শিল্পী সুরেন্দ্রনাথ করের স্থাপত্য ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যকে পর্যটনের মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল করতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু পূর্ত দফতরের অনুমতি না মেলায় বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছে। দুর্গোৎসবের ছুটির কারণে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে জেলা প্রশাসনকে কোনও অনুমতির নথি দেখাতে না পারায় প্রশ্ন আরও গাঢ় হচ্ছে।