একদিকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গেছে পুজোর সাজসজ্জার প্রস্তুতি। রঙিন আলো, ব্যানার আর হোর্ডিংয়ে ভরে উঠছে রাস্তাঘাট। ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে বিপাকে পড়লেন শান্তিনিকেতনের শতাধিক হকার। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জারি হল উচ্ছেদের নোটিশ। আর তা ঘিরেই শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর পাঠভবনের হস্টেলে বসে মদ্যপান, সাসপেন্ড দশম ও দ্বাদশের পাঁচ ছাত্র
বিশ্বভারতীর নোটিশ অনুযায়ী, ‘ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউস’ থেকে ‘ফায়ার ব্রিগেড মোড়’ পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে থাকা রাস্তার উপর কোনও হকার বসতে পারবেন না। সাত দিনের মধ্যে দোকান সরিয়ে নিতে হবে।নোটিশ হাতে পেয়ে ক্ষুব্ধ ছোট ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, পঁচিশ-তিরিশ বছর ধরে তাঁরা এখানে ব্যবসা করছেন। কেউ কেউ বলেন, তাঁরা বিশ্বভারতীর নিয়ম মেনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। আবর্জনা ফেলেন না। অথচ পুজোর আগে হঠাৎ করে কেন এই নির্দেশ? ব্যবসা বন্ধ হলে সংসার চলবে কীভাবে? সন্তানদের পড়াশোনাই থেমে যাবে। আরও এক হকারের ক্ষোভ, সাত দিনের সময় দিলেও বা কী হবে? তাঁরা কোথায় গিয়ে ব্যবসা করবেন? ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই উত্তাল রাজনীতি।
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বিতর্কিত প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সময়ের মতোই একই পথে হাঁটছেন নতুন উপাচার্যও। সাধারণ মানুষের জীবিকা কেড়ে নেওয়া একেবারেই অনুচিত। বামফ্রন্টও একই সুরে বলেছে, পুজোর আগে এমন নোটিশ অন্যায্য। অপরদিকে, বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর নিজস্ব জায়গায় কী হবে তা কর্তৃপক্ষের বিষয়। তবে সময়টা পুজোর ঠিক আগে কেন বেছে নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরাও। পুজোর আবহে এমন নোটিশ কার্যত আতঙ্ক ছড়িয়েছে শান্তিনিকেতনের ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে। একদিকে দীর্ঘদিনের জীবিকার জায়গা হারানোর শঙ্কা, অন্যদিকে রাজনৈতিক তরজার আঁচ। স্থানীয়দের বক্তব্য, উৎসবের মুখে এরকম সিদ্ধান্তের ফলে পুজোর আনন্দে ভাঁটা পড়বে।