কলকাতায় টানা বৃষ্টির জেরে জমা জলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের। একের পর এক প্রাণহানির ঘটনায় সরব হয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে তিনি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টে। পাশাপাশি, বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে কেন তা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতি সুজয় পালের বেঞ্চ সেই মামলার শুনানির অনুমতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সকাল সকাল রোদ উঠেছে কলকাতার আকাশে, শহরের রাস্তায় জমা জল কি নেমেছে?
সোমবার রাতের প্রবল বৃষ্টিতে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। যাদবপুর, পার্কসার্কাস, ভবানীপুর, তারাতলা, একবালপুর সবজায়গাতেই জল দাঁড়িয়েছিল হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত। সেই জমা জলে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার ছিঁড়ে পড়ায় মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি হয়। নেতাজিনগরে সাইকেল চালানোর সময় বিদ্যুতের স্পর্শে প্রাণ হারান এক যুবক। একইভাবে কালিকাপুর, বালিগঞ্জ প্লেস, বেনিয়াপুকুর-সহ একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় আরও কয়েকজনের। মৃতদের মধ্যে ইকবালপুরের বাসিন্দা জিতেন্দ্র সিংয়ের বাড়িতে বুধবার যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন জিতেন্দ্রর দুই ছেলের পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ চাকরির দায়িত্ব নেবে প্রশাসন। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই পরিবারকে যেকোনও বিপদে পাশে থাকার আশ্বাস দেন মেয়র।
এদিকে, একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় নওশাদ সিদ্দিকী সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, প্রতি বছর একই সমস্যা ঘটছে, অথচ কোনও স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। তাই ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তিনি আদালতের কাছে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে এমন দুর্ঘটনার নেপথ্যে দায় কার তা স্পষ্ট হয়। কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই জনস্বার্থ মামলাটি গ্রহণ করেছে।