সোমবার রাতের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর থেকে আবহাওয়া ভালো হতে শুরু করে মঙ্গল দুপুর থেকেই। আজ কলকাতার কোথাও কোথাও কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে কিছুক্ষণের জন্য। তবে মোটের ওপর শহর শুকনো। রোদ উঠেছে বহু জায়গায়। এদিকে অনেক জায়গাতেই জল নেমেছে। অনেক জায়গায় আবার ২৪ ঘণ্টা পরও জল জমে আছে। এই আবহে একরাতের বৃষ্টিতেই ১৯৭৮ সালের বন্যার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কলকাতার বর্তমান পরিস্থিতির। এখনও পর্যন্ত কলকাতা এবং শহরতলিতে ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। এই আবহে পুজোর মুখে জলযন্ত্রণা নিয়ে মুখ খোলেন ফিরহাদ।
আজ তিনি বলেন, 'এটি একটি অদ্ভুত পরিস্থিতি। এর আগে কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ১৮০ মিলিমিটার। কিন্তু এ দিন বৃষ্টি হয় ৩০০ মিলিমিটারের বেশি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এর জন্যে পুরকর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। কিন্তু কিছু জায়গায় পাম্প বসিয়ে যতই জল বের করার চেষ্টা হচ্ছে, তাতে ব্যাকফ্লো করছে।' এদিকে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুমিছিল প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, 'এর আগে ল্যাম্পপোস্টে হাত দিলে তড়িতাহিত হয়ে মৃত্যু হতে দেখেছি। এখন তো জল জমলে সেখানে জলেই বিদ্যুৎ হয়ে যাচ্ছে। এটা নতুন পরিস্থিতি। দোষ দেওয়ার বা দোষ নেওয়ার সময় এটা নয়।'
এদিকে আগামী শনি ও রবিবার ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই আবহে আগেভাগে পরিকল্পনা করেই পরিস্থিতি সামলানোর পরিকল্পনা করছেন পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। এই আবহে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ কথা বলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে এবং আধিকারিকদের সঙ্গে। এদিকে শনি-রবি পুরো পুজো মোডেই চলে যাবে শহর। এহেন পরিস্থিতিতে পুজোর সময় রাস্তা অল্প জল জমলেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আতঙ্ক দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শহরের বড় নালা ও খাল পরিষ্কারে নেমেছে পুরসভা। এদিকে নীচু এলাকাগুলিতে মোবাইল পাম্প বসানো হচ্ছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার টেকনিক্যাল টিম ও কন্ট্রোল রুম চালু। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা ঠেকাতে বিদ্যুৎ সংস্থা ও পুলিশের সঙ্গে যৌথ সমন্বয় বজায় রাখবে পুরসভা।
এদিকে পুজো মন্ডপ সংলগ্ন এলাকায় বাড়তি নজরদারি চালানো হবে। মণ্ডপের আলোকসজ্জা থেকে যাতে কোনও বিপত্তি না ঘটে, সেদিকে নজর রাখা হবে। এই বিষয়ে তারক সিংহ বলেন, 'পুজোর দিনগুলিতে সাধারণ মানুষের যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয় সে দিকে নজর থাকবে। সোম এবং মঙ্গলবার দু’দিন ধরে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ রকম বৃষ্টি হলে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে একটু বেশি সময় লাগবে ঠিকই, কিন্তু আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।'