লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ অলিম্পিকের আগে বড় ধাক্কা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। ১০০ বছর পর অলিম্পিকে থাকছে ক্রিকেট। তার আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) নির্বাসিত করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। মঙ্গলবার আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অভিযোগ, আড়াল থেকে ক্রিকেটে একাধিক নিয়ম ভেঙ্গে গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যে কারণেই বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল তাদেরকে নির্বাচিত করেছে। গত এক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট বোর্ডের কার্যকলাপ ও সংগঠনের উপরে নজর রাখার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা।
আইসিসির তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘নানা পর্যবেক্ষণের পর আইসিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নির্বাসিত করার। নির্বাসন থাকাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য দেশ নয়। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।’ আইসিসি জানিয়েছে, দীর্ঘ এক বছর ধরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তবুও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট সঠিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া দেশটির অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির স্বীকৃতি পেতেও কোন অগ্রগতি হয়নি। বারবার এমন কর্মকাণ্ড ঘটেছে, যা ক্রিকেটের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। তবে সদস্যপদ স্থগিত হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দলগুলি আইসিসির টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে। বিশেষ করে ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের প্রস্তুতিমূলক আসরগুলিতেও খেলার সুযোগ থাকবে তাদের। খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার ও পারফরম্যান্স ব্যাহত না হয়, সে জন্য সরাসরি ব্যবস্থা নেবে আইসিসি।
আইসিসি জানিয়েছে, এখন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দলের ব্যবস্থাপনা সামলাবে তাদের নিযুক্ত প্রতিনিধি দল। তারা মূলত খেলোয়াড়দের উন্নতি, হাই-পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম এবং প্রস্তুতিমূলক কাজগুলি তদারকি করবে।একই সঙ্গে একটি ‘নরমালাইজেশন কমিটি’ গঠন করা হবে। এই কমিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের সংস্কার কার্যক্রম তদারকি করবে। তাদের কাজ হবে সঠিক শাসনব্যবস্থা তৈরি, কাঠামোগত পরিবর্তন আনা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর করা।আইসিসি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এটি দুঃখজনক হলেও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত। ক্রিকেটের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ রক্ষা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ সংস্থাটি আরও বলেছে, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের প্রসার অব্যাহত রাখতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।অর্থাৎ আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে তাদের খেলোয়াড়রা। সদস্যপদ ফেরাতে হলে এখন থেকে প্রতিটি সংস্কার কার্যকর করতে হবে আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী।
আরও পড়ুন-‘ভোট চুরি' এজেন্ডা! ভোটমুখী বিহারে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক, নেপথ্যে নয়া রণকৌশল?
যদিও বিষয়টা হঠাৎ হয়নি। ২০২৪ সালের জুলাইতেই আইসিসি নোটিস পাঠায়। ১২ মাস সময় দেওয়া হয়। তারমধ্যে যদি নিয়মকানুন মেনে না চলে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হতে পারে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ইউএসএ ক্রিকেট একটাও শর্ত পূরণ করেনি। তাই বার্ষিক সাধারণ সভাতেই সানপেশনসনে সিলমোহর পড়ল।বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাসন কেবল একটা বোর্ডকে শাস্তি দেওয়া নয়। সাবধানবার্তাও বটে, যদি নিয়ম মানা না হয়, যদি দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়, তবে বড় দেশ হোক বা ছোট, ক্রিকেটের দরজা কারও জন্যই চিরতরে খোলা থাকবে না।