রবিবার এশিয়া কাপের ম্যাচে পাকিস্তানিদের আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় দলের প্রশংসা করলেন ভারতের সহকারী কোচ রায়ান টেন ডেসকটে। সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ শিবির নিয়মিত ভাবে ভারতীয়দের উস্কানি দিচ্ছিল, বিশেষত পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং হারিস রউফ। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচে হারিস এবং ওপেনিং ব্যাটার সাহিবজাদা ফারহান কিছু আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন। ভারতীয় সমর্থকদের স্বভাতই তা ভালো লাগেনি। এই আবহে রায়ান বলেন, 'আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, পরিস্থিতির কারণে খেলোয়াড়দের ওপর যে পরিমাণ চাপ তৈরি করা হয়েছিল। এতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন। আমি হারিসের বেশ কিছু কাণ্ড দেখেছি। তবে এগুলো আমাদের উদ্বেগের বিষয় নয়। ছেলেরা যেভাবে নিজেদের কাজ করে গিয়েছে, তাতে আমরা সত্যিই গর্বিত। মাঠে তাদের ব্যাটে আগুন জ্বলছিল।'
উল্লেখ্য, সাহিবজাদা ফারহান তাঁর পঞ্চাশ করার পরে বন্দুকের মতো করে ব্যাট ধরে উদযাপন করেছিলেন। এই বছরের শুরুতে কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পাক জঙ্গিরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সাহিজবাদার এই সেলিব্রেশনে বিতর্ক হয়। এবং তাঁর এই অঙ্গভঙ্গি স্পষ্টতই অসংবেদনশীল ছিল। এদিকে হারিস রউফ ভারতীয় দর্শকদের দিকে আঙুল তুলে '৬-০' ইশারা করেছিলেন এবং বিমান ধ্বংস হওয়ারও ইঙ্গিত করেছিলেন হাতে। উল্লেখ্য , পাকিস্তান দাবি করেছিল যে তারা অপারেশন সিঁদুরের সময় তারা ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিল। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে সেই ভুয়ো দাবি নিয়েই গর্বিত পাকিস্তান। আর করিকেটে না পেরে উঠে সেই ভুয়ো দাবি নিয়েই ভারতীয় সমর্থকদের কটাক্ষ করার চেষ্টা করেছিলেন হারিস।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানকে এককথায় উড়িয়ে দিয়ে সুপার ৪-এর যাত্রা শুরু করেছে ভারত। সেই জয়তে উল্লেখযোগ্য অবদান ওপেনার শুভমন গিলের। এরই সঙ্গে ম্যাচ জেতানো পারফর্ম্যান্স দিয়েছেন অপর ওপেনার অভিষেক শর্মা। পঞ্জাবের এই দুই তরুণ তুর্কি মাঠে পাকিস্তানিদের ব্যাট এবং মুখ দিয়ে কড়া কড়া জবাব দিয়েছেন। আর ম্যাচ শেষেও সোশ্যাল মিডিয়াতে পাকিস্তানের নাম না করে ট্রোল করলেন দু'জনেই। ম্যাচের মুহূর্তের ছবি দিয়ে সংক্ষিপ্ত বার্তায় দুই তারকাই পাকিস্তানকে খোঁচা মারলেন। শুভমন গিল নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'খেলাই কথা বলে, শব্দ নয়'। এদিকে অভিষেক শর্মা আবার নিজের পোস্টে লেখেন, 'তোমরা বরং কথা বলো, আমরা ম্যাচ জিতি।' এদিকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, 'আজ ব্যাপারটা খুব সহজ ছিল। কোনও কারণ ছাড়াই যেভাবে আমাদের দিকে তেড়ে আসছিল, সেটা আমার একদমই পছন্দ হয়নি। একমাত্র এভাবেই (ব্যাটিং) আমি ওদের ওষুধ দিতে পারতাম।'
উল্লেখ্য, গত রবিবারের ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান দল শুরুতে আক্রমণ শানিয়েছিল। ফখর জামান ও সাহিবজাদা ফারহান (৫৮) প্রথম উইকেটে ছোটখাটো ঝড় তোলেন। হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে এই জুটি ভেঙে ভারত প্রথম সাফল্য পায়। এর পরে সইয়ম আয়ূব এবং ফারহানের জুটি ১০ ওভারে ৯১ রানে নিয়ে যায় পাকিস্তানকে। তখন মনে হচ্ছিল পাকিস্তানও ২০০ স্কোর করতে পারে। কিন্তু শিবম দুবে এসে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। সইয়ম ও সাহিবজাদা ফারহানের মতো দুটি বড় উইকেট নেন দুবে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ২০ ওভারে ১৭১ রান করতে সক্ষম হয়েছিল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অভিষেক শর্মা (৭৪) এবং শুভমান গিলের (৪৭) জুটি টিম ইন্ডিয়াকে ঝড় তোলেন মাঠে। প্রথম উইকেটে দু'জনে মিলে ৯.৫ ওভারে ১০৫ রান যোগ করেন। এরপর বাকি ব্যাটারদের কাজ সহজ হয়ে যায়। শেষে তিলক ভার্মা ১৯ বলে ৩০ রান করে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন।