বারাসত আদালত চত্বর পরিণত হল রণক্ষেত্রে। অভিযোগ, আইনজীবীদের একাংশের হঠাৎ আক্রমণে রক্তাক্ত হলেন দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্মী। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আদালত চত্বর থেকে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত। ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফরাক্কায় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা, জখম তিন সিভিক ভলান্টিয়ার ও দুই পুলিশকর্মী
জানা যায়, এই ঘটনার সূত্র সোমবার সন্ধ্যা। বারাসত আদালতের আইনজীবী দুলাল সরকার পরিবার-সহ গাড়িতে করে টাকি রোড ধরে দত্তপুকুরের দিকে যাচ্ছিলেন। কাজিপাড়া পার হওয়ার পর বামনগাছির কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরতে থামলে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বচসা বাধে। অভিযোগ, সেই বচসা মারামারিতে গড়ায় এবং আইনজীবীর পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ঘটনায় আহতরা বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে দত্তপুকুর থানায় আইনজীবীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলায় তদন্ত নেমে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার ওই তিনজনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। কিন্তু বিকেলে ধৃতদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ, আদালতের প্রাঙ্গণে উপস্থিত একাংশ আইনজীবী ধৃতদের লক্ষ্য করে হামলা চালান। ভিড় সামলাতে এগিয়ে যান বারাসত থানার এএসআই সুপ্রিয় ভদ্র। কিন্তু ক্ষোভের নিশানায় পড়েন তিনি নিজেই। ধস্তাধস্তির মাঝে রক্তাক্ত হন ওই পুলিশকর্মী।
ঘটনার জেরে আদালত চত্বর জুড়ে হুলস্থুল পড়ে যায়। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এমনকি ভিড়ের চাপে এক সাংবাদিকও জখম হন বলে জানা গেছে।
বারাসত জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অলোক সমাজপতি জানান, ঘটনাটি একপ্রকার ভুল বোঝাবুঝি। পুলিশকর্মী কীভাবে আহত হলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে তিনি তাঁকে উদ্ধার করেছেন। আইনজীবীরা আইন মেনেই চলেন।
অন্যদিকে, বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝড়খড়িয়া বলেন, কর্মরত অবস্থায় এক পুলিশকর্মীকে এভাবে রক্তাক্ত হতে হয়েছে এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত যেই হোক, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিনদুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশকর্মীর উপর হামলা তাও আবার আদালত চত্বরের মতো জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।