রুদ্রাক্ষের নাম শুনলেই মনে ভেসে ওঠে ভগবান শিবের প্রতিচ্ছবি। বিশ্বাস করা হয় যে প্রতিটি রুদ্রাক্ষের নিজস্ব তাৎপর্য এবং শক্তি রয়েছে, যা পরিধানকারীর জীবন বদলে দিতে পারে। রুদ্রাক্ষ কেবল একটি রত্ন নয় বরং একটি আধ্যাত্মিক যন্ত্র, যা মন ও আত্মাকে শান্তি দেয়। এর মধ্যে একটি হল ৩ মুখী রুদ্রাক্ষ, যা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশের ত্রিমূর্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এটি পরলে কেবল মানসিক শান্তিই পাওয়া যায় না বরং ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস এবং প্রাণশক্তিও বৃদ্ধি পায়। এই রুদ্রাক্ষ বিশেষ করে যারা সমস্যা, চাপ বা হীনমন্যতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য উপকারী।
৩ মুখী রুদ্রাক্ষকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এর তিনটি মুখ ভগবান ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশের শক্তির প্রতীক। এটি পরলে পুরানো পাপ এবং নেতিবাচক কর্মের প্রভাব কমে যায়। এই রুদ্রাক্ষ ব্যক্তিকে আত্মবিশ্বাস দেয় এবং জীবনের সমস্যাগুলির মুখোমুখী হওয়ার শক্তি জোগায়। আরও বলা হয় যে এটি পরার পর ব্যক্তি কখনও অসহায় হন না এবং ধীরে ধীরে জীবনে সাফল্য ও ভারসাম্য খুঁজে পান।
৩ মুখী রুদ্রাক্ষের উপকারিতা:
১. এই রুদ্রাক্ষ শরীরের অনেক সমস্যা দূর করে।
২. পেটের সমস্যা, জ্বর, ঠান্ডা এবং দুর্বলতা থেকে মুক্তি দেয়।
৩. চোখের সমস্যা, আলসার এবং ফোলাভাব দূর করতেও এটি কার্যকর।
৪. রক্তের সংক্রমণ এবং কলেরার মতো রোগে এটি উপকারী বলে বিবেচিত হয়।
৫. মঙ্গলের খারাপ প্রভাব কমায় এবং ভালো প্রভাব বাড়ায়।
৬. এটি পরলে জীবনে ইতিবাচকতা আসে এবং আত্মসম্মান বৃদ্ধি পায়।
৭. এই রুদ্রাক্ষ মনকে পবিত্র করে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
৮. হীনমন্যতা বা আত্মনিন্দার সঙ্গে লড়াই করা ব্যক্তিদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
৩ মুখী রুদ্রাক্ষের শাসক গ্রহ এবং দেবতা
প্রতিটি রুদ্রাক্ষের একটি শাসক গ্রহ থাকে এবং ৩ মুখী রুদ্রাক্ষের শাসক গ্রহ হল মঙ্গল। মঙ্গল সাহস, শক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এটি পরলে মঙ্গলের খারাপ প্রভাব হ্রাস পায় এবং ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
এর শাসক দেবতা হলেন ভগবান অগ্নি। অগ্নি পবিত্রতা এবং শক্তির প্রতীক। বিশ্বাস করা হয় যে এই রুদ্রাক্ষ পরিধানকারী ব্যক্তি অগ্নিদেবের আশীর্বাদে আত্মবিশ্বাসী এবং উদ্যমী হয়ে ওঠেন।
৩ মুখী রুদ্রাক্ষ পরার নিয়ম
১. শুক্লপক্ষের সোমবার ৩ মুখী রুদ্রাক্ষ পরা শুভ বলে মনে করা হয়।
২. এটি পরার আগে, এটি পরিষ্কার জল এবং গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করা উচিত।
৩. রুদ্রাক্ষ পরার আগে শিব মন্ত্র জপ করা ভালো।
৪. লাল বা হলুদ সুতোয় এটি পরা ভালো বলে মনে করা হয়।
৫. এটি পরার আগে একজন যোগ্য জ্যোতিষী বা গুরুর সঙ্গে পরামর্শ করা উপকারী।
৬. রুদ্রাক্ষ পরার পরে, নেতিবাচক অভ্যাস থেকে দূরে থাকা উচিত যাতে এর পূর্ণ প্রভাব অর্জন করা যায়।