কেন্দ্রীয় সরকারের চেষ্টাতেই নাকি কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কো স্বীকৃতি পেয়েছে। গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন দাবি করেছিলেন মন কি বাত অনুষ্ঠানে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস মোদীর সেই দাবিকে খারিজ করে দিল। বাংলার শাসক দলের তরফ থেকে বলা হল, 'প্রধানমন্ত্রী ডাহা মিথ্যা বলেছেন।' এমনকী এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে 'ডাক পিওন' বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে। পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে ঘাসফুল শিবিরের অভিযোগ, ভোটের রাজনীতি করতেই দুর্গাপুজোর ইউনেস্কো স্বীকৃতির বিষয়টি উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
উল্লেখ্য, গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মন কি বাত’-এর ১২৬তম পর্বে বলেছিলেন, 'কলকাতার শারদোৎসবের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার নেপথ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের অবদান রয়েছে। এ বার ছট পুজোকেও ইউনেস্কোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।' আর মোদীর এই মন্তব্যের পরই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ডাহা মিথ্যা বলেছেন। বামফ্রন্ট সরকার পুজোর বিষয়ে কোনও নজর দেয়নি। মমতাদি সরকারে এসে পুজোর ঐতিহ্য, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও বিশ্বায়নে নজর দিয়েছেন। সব ফাইল রাজ্যই তৈরি করে পাঠিয়েছিল। কোনও ক্ষেত্রে কেন্দ্র ডাক পিওনের ভূমিকা নিলে সেই কৃতিত্ব তাদের হয়ে যায় না।'
এদিকে এই বিষয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও। তাঁর কথায়, '২০২১ সালে বাংলার শারদোৎসব ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্জন করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নিয়ে সরাসরি উদ্যোগী হয়েছিলেন। তাঁর উদ্যোগেই সমস্ত নথি ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী তখন বহুবার বাংলায় এসেছিলেন। কিন্তু কোথাও তাঁকে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। হঠাৎ ২০২৫ সালে এসে কেন তিনি এই সংক্রান্ত দাবি করছেন? এটা কি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ নাকি? বাংলার মানুষ জানেন শারদোৎসবকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার কৃতিত্ব সম্পূর্ণরূপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।' উল্লেখ্য, বাংলা দখলের চেষ্টায় বিগত বেশ কয়েকবছর ধরেই বাঙালি অস্মিতাকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। এদিকে তৃণমূলও ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বাঙালিয়ানাকেই হাতিয়ার করছে। এই আবহে দুই দলের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে দুর্গাপুজো নিয়ে লেগে গেল দ্বন্দ্ব।