পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান তথা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির থেকে ভারত এশিয়া কাপ ট্রফি নেবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। এদিকে নিজেই ট্রফি দেবেন, অন্যের হাত দিয়ে তিনি ভারতকে ট্রফি নিতে দেবেন না, এটা স্থির করে রেখেছিলেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। এই সবের মাঝে প্রেজেন্টেশন প্রায় একঘণ্টা বিলম্বিত হয়েছিল। ভারতীয় দল স্টেজের সামনেই মাঠে বসে হাসি ঠাট্টা করছিল। এই সময় স্টেজে দাঁড়িয়ে থাকা নকভিকে ফোনে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। এদিকে পাকিস্তান দলও মাঠে আসছিল না। এই পরিস্থিতিতে ব্রডকাস্টারদের ম্যাচ পরবর্তী অনুষ্ঠানে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন ভারতীয় প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। পুরস্কার বিতরণী এতটা বিলম্বিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে এই নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ দেখা গেল না। বরং কাপ হাতে না পেয়েও তাঁরা 'ট্রফি' তুললেন।
টি২০ বিশ্বকাপের পরে রোহিত শর্মা যেভাবে মেসিকে অনুকরণ করে ট্রফি নিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, গতকাল সূর্যকুমার যাদবও খালি হাতে সেই অঙ্গভঙ্গি করেন। তাঁর হাত এমন ভাবে রাখা ছিল, যেন মনে হচ্ছিল তাঁর হাতে ট্রফি আছে। এমনকী ভারতীয় দলের বাকি ক্রিকেটাররাও হাত উঁচিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। পোডিয়ামের পিছনে তখন আগুনের ফুলটি ছুটছে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রফির ইমোজির সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা।
এদিকে নকভির থেকে ভারত ট্রফি গ্রহণ না করার কথা জানিয়ে দেওয়ার পরে এসিসি-র তরফ থেকে দাবি করা হয়, ভারত আজ ট্রফি এবং জয়ীদের মেডেল নেবে না। তাই পাকিস্তানকে রানার্সআপ মেডেল দিয়েই ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশন শেষ হয়ে যায়। প্রেজেন্টেশন চলাকালীন মহসিন নকভিকে একবারও হাসতে দেখা যায়নি। এমনকী পাকিস্তানি দলকে রাার্সআপ মেডেল দেওয়ার জন্য তাঁর নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি মেডেল দেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান সেই কাজ করে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি অধিনায়ক সলমন আলি আঘার হাতে রানার্সআপ চেক তুলে দেওয়ার সময় বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নকভিকে সামনে ডেকে আনেন।
উল্লেখ্য, রবিবার এশিয়া কাপে টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল ভারত। পাওয়ারপ্লেতে বিনা উইকেটে ৪৫ রান তুলে ফেলে তারা। দশম ওভারে গিয়ে ৮৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। তারপরও ভালো এগোচ্ছিল পাকিস্তান। ১২.৪ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর ছিল এক উইকেটে ১১৩ রান। সেখান থেকে ১৯.১ ওভারে ১৪৬ রানে অল-আউট হয়ে যায় পাকিস্তান। তাদের শেষ ৯ উইকেট পড়ে মাত্র ৩৩ রানে।
এদিকে ভারত ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই চাপে পড়ে। দুই ওপেনার সহ ভারতের ৩ উইকেট পড়ে যায় মাত্র ২০ রানেই। তারপর সঞ্জু স্যামসন এবং তিলক বর্মা হাল ধরেন। চতুর্থ উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন সঞ্জু স্যামসন এবং তিলক। তবে সঞ্জুও আউট হয়ে যান। এরপর শিবম দুবে এবং তিলক ভারতকে টানতে থাকেন। শিবম ২২ বলে ৩৩ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। আর শেষে রিঙ্কু একটি বল খেলেই উইনিং রান করেন হারিস রউফকে চার মেরে। গতকাল ফাইনালে ৫৩ বলে অপরাজিত ৬৯ রান করে ম্যাচের নায়ক ভারতের তিলক বর্মা।