এশিয়া কাপ চলাকালীনই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করেছিলেন এসিসি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। তিনি আবার কি না পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডেরও প্রধান। আবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। এই মহসিন নকভি ভারতে হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। এশিয়া কাপ চলাকালীন রোনাল্ডোর একটি সেলিব্রেশনের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন, যাতে এমন অঙ্গভঙ্গি ছিল যা থেকে তিনি বিমান ভেঙে পড়ার কথা বোঝাতে চেয়েছিলেন। মূলত হারিস রউফ মাঠে ভারতীয় দর্শকদের এই অঙ্গভঙ্গি করার পর আরও উস্কানি দিতেই এই সব কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন এসিসি চেয়ারম্যান। যদিও নভির এই কাজ মোটেও এসিসি চেয়ারম্যানসুলভ ছিল না। এই আবহে ভারত সিদ্ধান্ত নেয়, এহেন মানুষের হাত থেকে বিজয়ী ট্রফি তারা নেবে না। এই পরিস্থিতিতে ট্রফি আর ভারতীয় দলের জয়ী পদক নিয়ে পালিয়েছেন নকভি। যা কি না বেনজির। এহেন পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া।
দেবজিৎ সাইকিয়া বার্তাসংস্থা এএনআই-কে এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এসিসি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এশিয়া কাপ ২০২৫-এর ট্রফি নেব না। তিনি পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান নেতা। তাই আমরা তাঁর কাছ থেকে এই ট্রফি নেব না। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে সেই ভদ্রলোক পদক আর ট্রফি নিয়ে চলে যাবেন। তাই এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং আমরা আশা করি যে ট্রফি এবং পদকগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে... নভেম্বরে দুবাইতে আইসিসি-র একটি সম্মেলন রয়েছে। পরবর্তী সম্মেলনে, আমরা এসিসি চেয়ারপারসনের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাব।'
উল্লেখ্য, নিজেই ট্রফি দেবেন, অন্যের হাত দিয়ে তিনি ভারতকে ট্রফি নিতে দেবেন না, এটা স্থির করে রেখেছিলেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। এই সবের মাঝে প্রেজেন্টেশন প্রায় একঘণ্টা বিলম্বিত হয়েছিল। ভারতীয় দল স্টেজের সামনেই মাঠে বসে হাসি ঠাট্টা করছিল। এই সময় স্টেজে দাঁড়িয়ে থাকা নকভিকে ফোনে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। এদিকে পাকিস্তান দলও মাঠে আসছিল না। এই পরিস্থিতিতে ব্রডকাস্টারদের ম্যাচ পরবর্তী অনুষ্ঠানে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন ভারতীয় প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। পুরস্কার বিতরণী এতটা বিলম্বিত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে এই নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ দেখা গেল না। বরং কাপ হাতে না পেয়েও তাঁরা 'ট্রফি' তুললেন।
টি২০ বিশ্বকাপের পরে রোহিত শর্মা যেভাবে মেসিকে অনুকরণ করে ট্রফি নিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, গতকাল সূর্যকুমার যাদবও খালি হাতে সেই অঙ্গভঙ্গি করেন। তাঁর হাত এমন ভাবে রাখা ছিল, যেন মনে হচ্ছিল তাঁর হাতে ট্রফি আছে। এমনকী ভারতীয় দলের বাকি ক্রিকেটাররাও হাত উঁচিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। পোডিয়ামের পিছনে তখন আগুনের ফুলটি ছুটছে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রফির ইমোজির সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা।
এদিকে নকভির থেকে ভারত ট্রফি গ্রহণ না করার কথা জানিয়ে দেওয়ার পরে এসিসি-র তরফ থেকে দাবি করা হয়, ভারত আজ ট্রফি এবং জয়ীদের মেডেল নেবে না। তাই পাকিস্তানকে রানার্সআপ মেডেল দিয়েই ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশন শেষ হয়ে যায়। প্রেজেন্টেশন চলাকালীন মহসিন নকভিকে একবারও হাসতে দেখা যায়নি। এমনকী পাকিস্তানি দলকে রাার্সআপ মেডেল দেওয়ার জন্য তাঁর নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি মেডেল দেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান সেই কাজ করে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি অধিনায়ক সলমন আলি আঘার হাতে রানার্সআপ চেক তুলে দেওয়ার সময় বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নকভিকে সামনে ডেকে আনেন।