একটা সময় যখন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রায় জরাজীর্ণ অবস্থা, একা হাতে বাংলা সিনেমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। তথাকথিত কমার্শিয়াল ছবির বাইরেও যে বাংলা ছবি তৈরি করা যায়, সে কথা বুঝিয়েছিলেন তিনি। দর্শকদের ভালবাসতে শিখিয়েছিলেন আর্ট ফিল্মকে।
ঋতুপর্ণ ঘোষ, যিনি দর্শকদের সঙ্গে অন্যভাবে পরিচয় করিয়েছিলেন অভিনেতা অভিনেত্রীদের, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। জীবনের একটা বড় সময় কমার্শিয়াল ছবিতে অভিনয় করলেও ঋতুপর্ণা ঘোষের ছবিতে একেবারে নিজেকে অন্যভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। কাজের বাইরে ঋতুপর্ণের ভীষণ ‘ভালো বন্ধু’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: নাম না করেই শ্বেতাকে তুলোধোনা মৌমিতার, সমাজমাধ্যমে কোন সত্যি তুলে ধরলেন তিনি?
আরও পড়ুন: এবার পুজোয় ফেলুদার সঙ্গে পাড়ি দিন কাঠমান্ডু, কোন ওটিটি-তে মুক্তি পাবে সিরিজটি?
বন্ধুর জন্মদিনে তাই কিছুটা আবেগ তাড়িত হয়ে প্রসেনজিৎ লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন ঋতু। তুই নেই, কিন্তু তোর সৃষ্টি আর তোর ভালবাসা আজও আমাদের মধ্যে বেঁচে আছে।’ এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, ‘উৎসব’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘আবহমান’, ‘তিতলি’, ‘দোসর’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘চোখের বালি’ -ঋতুপর্ণের বহু ছবিতে বারবার বিভিন্ন চরিত্রে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে।
তবে প্রসেনজিৎ একা নন, পরিচালকের জন্মদিনে ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি কোলাজ করে একটি পোস্ট করেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। রামকমল লেখেন, ‘ভালো থেকো, তোমার জন্য একটা খবর আছে, জানি তুমি ওয়েট করবে না, দাড়াও কানে কানে বলে দিচ্ছি! জানতাম খুশি হবে... আশীর্বাদ দিও।’
পরিচালকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মীর ও ঋতুপর্ণ ঘোষের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘আজও! আজও অনেকে আছেন যাঁরা ভাবেন আমাদের বুঝি মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই ২০১১ সালে, ঘোষ & Co.-র পর থেকে। আমরা নাকি sworn enemies ছিলাম। একে অপরকে নাকি সহ্য করতে পারতাম না। আমি কিন্তু আজও মানুষটির জাবরা ফ্যান। আজ তাঁর জন্মদিন। তাই খুব স্বাভাবিক নিয়মে এই পোস্ট।And by the way, he’s still my favourite ‘phenomena of discussion’ on various platforms… বোধ হয় কোথাও ওনার ওই হাসি মুখে মিথ্যে রাগ ঝুলিয়ে “এক মারবো শয়তান!!" বলা’টা শোনার লোভে…'
বাংলা সিনেমাকে ঋতুপর্ণ ঘোষ যে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন, পরিচালকের অনুপস্থিতিতে সেই রীতিকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অন্য পরিচালকরা। কিছুদিন আগে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় অভিনীত ‘গৃহপ্রবেশ’ ছবিটিও ঋতুপর্ণ ঘোষের দৃষ্টিভঙ্গির কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আয়ার হাতে নির্যাতিত কৃষভি, মায়েদের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা কাঞ্চন-শ্রীময়ীর
আরও পড়ুন: নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঋতুপর্ণার, ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত হবে তাঁর প্রথম কবিতার বই
শুধু গল্প নয়, সিনেমায় শুভশ্রীর সাজসজ্জা অবিকল ‘চোখের বালি’ ছবিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের সাজসজ্জাকে মাথায় রেখে করা হয়েছিল। এই ভাবেই বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ঋতুপর্ণ ঘোষকে মনের মনিকোঠায় রেখে দেবে একটা গোটা বাঙালি জাতি।