বিরাট কোহলির টেস্ট কেরিয়ার সোমবার শেষ হয়েছে। একটি আবেগঘন ইনস্টাগ্রাম বার্তার মাধ্যমে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তাঁর বর্ণময় টেস্ট কেরিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন। বিরাট কোহলি তাঁর টেস্ট কেরিয়ার শেষ করলেন ১২৩টি টেস্টে ৯২৩০ রান করে, গড় ৪৬.৮৫। এখন থেকে তিনি টিম ইন্ডিয়ার জার্সি গায়ে শুধু ওডিআইতে খেলবেন, কারণ তিনি ইতিমধ্যেই ভারতের ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর টি২০ ফর্ম্যাট থেকেও অবসর নিয়েছেন।
এই তারকা ব্যাটারের অবসর আসে রোহিত শর্মার ৭ মে-র অবসরের ঠিক পরেই। The Indian Express-এর একটি প্রতিবেদনের মতে, বিরাট কোহলি সেদিনই, অর্থাৎ ৭ মে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অবসরের ঘোষণা করে দিতে চেয়েছিলেন। তবে সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁকে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল, কারণ তখন ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষ চলছিল। তাহলে কি BCCI বিরাট কোহলিকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করতে বলেছিল। অর্থাৎ প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি বিসিসিআই-এর তরফ থেকে কোহলিকে অবসর না নেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি?
আরও পড়ুন … ভিডিয়ো: কোহলির অবসরের সিদ্ধান্ত সঠিক, কিন্তু সময়টা ভুল… গাভাসকরের উদাহরণ টেনে বিরাটকে সিধুর পরামর্শ
শনিবার (১০ মে) ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর, কোহলি বিসিসিআই ও নির্বাচকদের জানান যে তিনি শীঘ্রই তাঁর সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আনবেন এবং সোমবার তিনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করে দেবেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তাঁর এই সিদ্ধান্তের পিছনে পরিবারকে আরও সময় দেওয়ার ইচ্ছাই মূল কারণ। গত এক বছরে কোহলি বহুবার ইংল্যান্ডে উড়ে গেছেন স্ত্রী ও অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা, কন্যা ভামিকা এবং পুত্র আকায়ার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য।
আরও পড়ুন … কামিন্স-হেডরা কি IPL 2025 খেলতে ফিরবে? ভারত-পাক বর্তমান পরিস্থিতির পরে ছবিটা কী?
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে ভারতের ১-৩ ব্যবধানে হারের পর বিসিসিআই একটি নির্দেশিকা জারি করে, যাতে বলা হয়, সফরের সময় খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যরা নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনই দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন। কোহলি এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না।
আইপিএল ২০২৫-এর এক অনুষ্ঠানে কোহলি বলেছিলেন, ‘পরিবারের ভূমিকা মানুষকে বোঝানো খুব কঠিন। কতটা ভিতর থেকে স্থির রাখে সেটা বোঝানো যায় না। যখন বাইরের দুনিয়ায় কিছু তীব্র ঘটনা ঘটে, তখন পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়াটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমি অনুভব করি। আমি চাই না আমার রুমে গিয়ে একা বসে থাকি, মন খারাপ করি। আমি চাই, আমি যেন স্বাভাবিকভাবে জীবন কাটাতে পারি।’
এরপরে বিরাট কোহলি বলেন, ‘তখনই খেলাকে আমি দায়িত্ব হিসেবে নিতে পারি – এমনভাবে নয় যে শুধু কথার কথা, বরং বাস্তব অর্থে যে আপনি আপনার দায়িত্ব শেষ করেছেন এবং বাড়ি ফিরে গেছেন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন এবং স্বাভাবিক পারিবারিক জীবন চলছে।’
এরপরে বিরাট কোহলি বলেছিলেন, ‘আমার জন্য এটা অত্যন্ত আনন্দের দিন। আমি কোনও সুযোগই হাতছাড়া করব না পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর। আমি এতে ভীষণ হতাশ, কারণ এমন কিছু মানুষ, যাঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই এসব বিষয়ে, তাঁদের আলোচনায় টেনে আনা হয়, বলা হয় – ‘ওদের দূরে রাখা দরকার।’ এটা একেবারেই ঠিক নয়।’