বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা পুর এলাকায় সংগঠনকে মজবুত করতে বিশেষ পরিকল্পনা বিজেপির। সেই উদ্দেশ্যে কলকাতা পুর এলাকার জন্য আলাদা সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী শিবির। এবার শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে গঠন করা হবে আলাদা কমিটি। জানা গিয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটিতে থাকবেন পাঁচজন সদস্য। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বিজেপির সাংগঠনিক স্তরে প্রথমবার শহরভিত্তিক একটি নতুন রূপ দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: মিঠুনের করা মানহানির মামলা নিয়ে কী পরিকল্পনা কুণালের? নিজেই জানালেন তৃণমূল নেতা
বিজেপির সংগঠন কাঠামো অনুযায়ী এতদিন ছিল বুথ কমিটি, তার উপরে মণ্ডল কমিটি। পাশাপাশি শক্তিকেন্দ্রও রয়েছে, যেখানে প্রায় পাঁচটি বুথ মিলিয়ে কার্যক্রম চালানো হয়। কিন্তু কলকাতা পুর এলাকার বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। এক একটি ওয়ার্ডেই প্রায় ২৫ হাজার ভোটার রয়েছেন। ফলে কয়েকটি বুথ বা একটি শক্তিকেন্দ্র দিয়ে এই বিপুল ভোটারদের কাছে কার্যকরভাবে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছিল না। এই বাস্তব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই আলাদা করে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে দল।
এক বিজেপি নেতা বলেন, গ্রামের মতো নয় কলকাতা। এখানে ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার সংখ্যা অনেক বেশি। তাই সরাসরি সংগঠনের নিচু স্তর থেকে উপরের স্তরের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দলের দাবি, এর ফলে প্রত্যেক ওয়ার্ডে স্থানীয় নেতৃত্বকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজে লাগানো যাবে এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানো সম্ভব হবে।
রাজ্যজুড়ে গত এক দশকে বিজেপি বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের প্রভাব বাড়ালেও কলকাতা শহরে তা প্রতিফলিত হয়নি। বরং মহানগরে বারবার হতাশাজনক ফল এসেছে। এবার সেই সমীকরণ পাল্টাতেই এই নতুন পদক্ষেপে জোর দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির এক শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, ওয়ার্ড কমিটি তৈরি হলে সংগঠন আরও মজবুত হবে। একই সঙ্গে পদ সৃষ্টি করা যাবে। ফলে মণ্ডল স্তরে নেতৃত্ব পাওয়ার দাবিদার অনেককেই ওয়ার্ড কমিটিতে এনে দলের ভেতরে ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হবে।
বিজেপির নেতাদের বিশ্বাস, এই নতুন সাংগঠনিক রূপ শুধুমাত্র দলের ভেতরের অসন্তোষ কমাবে না, বরং আগামী পুরভোট বা বিধানসভা ভোটে কলকাতায় শক্ত ভিত গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এটাই এখন গেরুয়া শিবিরের কৌশলগত ভরসা।