উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে এক ব্যবসায়ীর দোকানের সামনে ড্রেনের উপর থাকা কংক্রিটের স্ল্যাব ভাঙাকে কেন্দ্র করে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়াল। অভিযোগের তীর সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরের দিকে। কোনও নোটিস বা প্রশাসনিক নির্দেশ ছাড়াই কীভাবে এভাবে ভাঙচুর চালানো হল? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: বিধবা মহিলার কাছে তোলা দাবি, কুপ্রস্তাব, শ্লীলতাহানি, কাাঠগড়ায় TMC কাউন্সিলর
চিন্তারানি বারুই নামে ওই ব্যবসায়ীর স্বামী অমিত বারুই ২০১৬ সালে প্রয়াত হন। তারপর থেকে স্বামীর ইমারতী সামগ্রীর দোকান চালিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার সামলাচ্ছেন তিনি। চিন্তারানির অভিযোগ, গত পরশুদিন পানিহাটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায় দলবল নিয়ে হঠাৎ হাজির হন। সঙ্গে আনা হয় একটি জেসিবি। অভিযোগ, কাউন্সিলরের নির্দেশেই দোকানের সামনের ড্রেনের উপর সিমেন্টের স্ল্যাব ভেঙে ফেলা হয়। শুধু তাই নয়, জলের পাইপলাইনও কেটে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার দৃশ্য ধরা পড়েছে এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁকে কোনও নোটিস পাঠানো হয়নি। কাউন্সিলর নিজে লোকজন নিয়ে এসে ভাঙচুর করেছেন। উপরন্তু জেসিবি দিয়ে স্ল্যাব ভাঙতে যে খরচ হয়েছে, সেই টাকা তাঁকে দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম হয়ে ওঠে এলাকা। পানিহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ দে জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জলের লাইন বিনা নোটিসে কাটা যায় না। তবে কাজের সময় দুর্ঘটনাবশত লাইন কেটে যেতে পারে। আসল সমস্যা হল, ড্রেনের উপর কংক্রিটের স্ল্যাব থাকায় নিকাশির কাজে সমস্যা হচ্ছিল।
অন্যদিকে বিজেপি এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কাউন্সিলরদের একহাত নিয়েছে। বিজেপির উত্তর কলকাতা শহরতলির এক নেতা বলেন, তৃণমূল কাউন্সিলররা এখন সাধারণ মানুষের উপর দাদাগিরি করছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর উপর জুলুম চালাচ্ছেন। মানুষের চোখ খুলে যাওয়া উচিত।
যদিও অভিযোগ অবশ্য সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর শ্রাবন্তী রায়। তাঁর দাবি, ড্রেনের উপর স্থায়ী কালভার্ট ওই ব্যবসায়ী নিজে অবৈধভাবে করেছেন। অনুমতি নিয়েছেন কার কাছ থেকে, সেটাই আগে বলুন। দশ বছর ধরে কালভার্টের তলা পরিষ্কার হয়নি। ফলে ড্রেনে জল জমে স্থানীয়রা সমস্যায় পড়েছেন। বহুদিন ধরে এলাকাবাসী এই বিষয়ে তাঁকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কাউন্সিলরের আরও দাবি, কালভার্ট ভাঙার কথা ব্যবসায়ী নিজেই বলেছেন। জেসিবি আনার কথাও উনি বলেছেন। জেসিবির খরচও তিনি দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।