‘দেশজুড়ে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) করানো আমাদের বিশেষ অধিকার। শীর্ষ আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।স্পষ্ট ভাষায় কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, যদি শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয় তবে সেটা কমিশনের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়। সেখানে শীর্ষ আদালতের কাছে তিনি আবেদন জানান, ‘ভারতে যে কোনও নির্বাচনের আগে এসআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হোক। যাতে দেশের রাজনীতি ও অন্যান্য নীতি নির্ধারণের অধিকার শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকদের হাতে থাকে।’ তবে আদালত এমন কোনও নির্দেশ দিক তা একেবারেই চায় না দেশের নির্বাচন কমিশন। তার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতে পাল্টা হলফনামা পেশ করে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে পর্যায়ক্রমে এসআইআর পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক অধিকার। তাই, আদালত এইভাবে এসআইআর আদেশ দিতে পারে না। যদি আদালত এই ধরনের নির্দেশ দেয়, তাহলে তা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক এখতিয়ারের উপর হস্তক্ষেপের শামিল হবে।
আরও পড়ুন-লন্ডনে বিদ্রোহের আগুন! পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র অভিবাসন-বিরোধী মিছিল
নির্বাচন কমিশন আরও জানিয়েছে, 'সংবিধানের ৩২৪ ধারা অনুযায়ী ভোটার তালিকা তৈরি করা ও তা বদল করা শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের কাজ। সেখানে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এবং সঠিক ভোটার লিস্ট তৈরির জন্য এসআইআর একান্ত প্রয়োজনীয়।’ কমিশন আরও জানিয়েছে, ‘আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত এবং ভোটার তালিকাকে সঠিক রাখতে সর্বদা কাজ করা হয়।’ নির্বাচন কমিশন ব্যাখ্যা করেছে যে ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং ১৯৬০ সালের ভোটার নিবন্ধন বিধির আওতায় তাঁদের এই ক্ষমতা রয়েছে যে তাঁরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংশোধনী প্রক্রিয়া চালু করতে পারে। এই বিতর্কের আগেই গত ৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে নির্দেশ দেয়, এসআইআরে আধার কার্ডকে পরিচয়পত্র হিসেবে গণ্য করার জন্য। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে নির্দেশ কার্যকরের কথা বলা হয়। যদিও আদালত জানায়, আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। ভোটার তালিকায় নাম তোলার সময় আধার নম্বর যাচাই করে নিক কমিশন। এই বিতর্কের মাঝেই এবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিল নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন-লন্ডনে বিদ্রোহের আগুন! পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র অভিবাসন-বিরোধী মিছিল
কয়েক মাস পরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পদ্ধতিগতভাবে, সেখানে ভোটার তালিকার একটি বিশেষ নিবিড় সমীক্ষ চলছে। এর বিরোধিতা করে বিরোধী দলগুলি সুপ্রিম কোর্টে ছয়টিরও বেশি আবেদন দাখিল করেছে। এসআইআর- এর বিরুদ্ধে আবেদনকারীরা হলেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস, আরজেডি, পিইউসিএল, কংগ্রেস ইত্যাদি।