গত সপ্তাহে টেক্সাসের ডালাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মোটেল ম্যানেজার চন্দ্রমৌলি 'বব' নাগামাল্লাইয়াহকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প 'আমেরিকাকে আবার নিরাপদ' করার অঙ্গীকার করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন, তাঁর প্রশাসন অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের প্রতি 'নমনীয়' হবে না। (আরও পড়ুন: ৭৩ বছর বয়সি শিখ বৃদ্ধাকে আটক আমেরিকায়, ট্রাম্পের নীতি নিয়ে ফের বিতর্ক, বিক্ষোভ)
ট্রাম্প লিখেছেন, 'টেক্সাসের ডালাসে চন্দ্র নাগামাল্লাইয়াহ নামে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে হত্যার ভয়াবহ প্রতিবেদন সম্পর্কে আমি অবগত। তাঁকে তাঁর স্ত্রী ও ছেলের সামনে নির্মমভাবে শিরশ্ছেদ করেছিল কিউবা থেকে আসা এক অবৈধ বিদেশি। এই হত্যাকারীর কখনও আমাদের দেশে থাকার কথা ছিল না।' তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন যে অভিযুক্ত ইয়োর্দানিস কোবোস-মার্টিনেজকে এর আগে শিশু যৌন নির্যাতন, গ্র্যান্ড থেফট অটো এবং জালিয়াতি মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল। একাধিক 'ভয়াবহ অপরাধের' জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। ট্রাম্পের কথায়, তাকে 'অযোগ্য জো বাইডেনের অধীনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল'। এদিকে অপরাধী হওয়ার কারণে কিউবা তাদের দেশে এই ব্যক্তিকে ফেরাতে চায়নি। এই হামলাকে 'বর্বর' আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, এই ধরনের ব্যক্তিকে দেশটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়। তিনি 'আমেরিকাকে আবার নিরাপদ করার জন্য' হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম, অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিদের প্রশংসা করেছেন।
উল্লেখ্য, মার্কিন শহর ডালাসে এক মোটেলে ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার নিয়ে নাগামাল্লাইয়াহর সঙ্গে বচসা হয়েছিল ইয়োর্দানিস কোবোস-মার্টিনেজের। পরে সেই সামান্য বচসা থেকে মেজাজ হারিয়ে নৃশংস কাণ্ড করে বসে ইয়োর্দানিস কোবোস-মার্টিনেজ। নাগামাল্লাইয়াহর পুত্র এবং স্ত্রীর সামনেই তাঁর মুণ্ডচ্ছেদ করে তা দিয়ে 'ফুটবল' খেলেন মার্টিনেজ। ভাইরাল হওয়া এক সিসিটিভ ফুটেডে দেখা যায়, চন্দ্রমৌলির মুণ্ড রাস্তায় গড়িয়ে যাচ্ছে। যতটা রাস্তা তা গড়িয়ে যায়, ততখানি অংশে রক্ত লেগে থাকে। এরপর সেই মুণ্ড হাতে নিয়ে নেয় মার্টিনেজ।
জানা যাচ্ছে, মার্টিনেজ ওই মোটেলে সাফাই কর্মী। তাকে ভাঙা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন চন্দ্রমৌলি। চন্দ্রমৌলি এক মহিলা কর্মীকে দিয়ে অনুবাদ করিয়ে মার্টিনেজকে বিষয়টি বলার জন্য নির্দেশ দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, চন্দ্রমৌলির কথার ভঙ্গিমা পছন্দ হয়নি মার্টিনেজের। তার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড। এরপরই দা নিয়ে চন্দ্রমৌলির দিকে ছুটে যায় মার্টিনেজ। পার্কিং এলাকায় ছুটতে থাকেন চন্দ্রমৌলি। তখনই তাঁর শিরোচ্ছেদ করে মার্টিনেজ। দিনেদুপুরে সকলের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। বেশ কিছু রিপোর্টের দাবি, চন্দ্রমৌলির স্ত্রী, পুত্ররের সামনেই এই খুন হয়।