'জল নুপূর'-এর নায়িকা হয়ে লাভলী মৈত্র মন কেড়ে নিয়েছিলেন দর্শকদের। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একাধিক মেগায় নজর কাড়েন তিনি। তারপর পা রাখেন রাজনীতির মঞ্চেও। জনপ্রতিনিধি হিসেবে শুরু করেন কাজ। রাজনীতির কারণে মাঝের বেশ কিছুটা সময় দর্শকরা তাঁকে পর্দায় পাননি। তারপর গড়িয়েছে অনেকটা সময়, জানুয়ারিতে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের 'চিরসখা'-এর হাত ধরে ফের তাঁর দেখা মেলে ছোট পর্দায়। এখন 'চিরসখা'র সুবাদে তিনি বর্তমানে বাংলার ঘরের মেয়ে 'মিটিল'। তাঁর হাত ধরেই নতুন ট্র্যাক আসতে চলেছে মেগায়। তাই শ্যুটিংয়ের প্রবল ব্যস্ততা। তার মাঝেই খানিক সময় বের করে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার সঙ্গে মাতৃ দিবসের আবহে নিজের মেয়েকে নিয়ে কথা ভাগ করে নিলেন নায়িকা।
রাজনীতির পাশাপাশি অভিনয় জীবন সবটা মিলিয়ে মেয়ের বড় হওয়ার প্রতিটা মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারছেন না নায়িকা। তাই মনের কোণে জমেছে খানিক খারাপ লাগা। তাঁর কথায়, 'আমার মেয়ের যখন মাত্র দেড় বছর বয়স, সেই সময় থেকে আমি আবার কাজ করা শুরু করি। তারপর ওর যখন ২ বছর হয়, তখন আমি ভোটে প্রার্থী হয়েছিলাম। সেই তখন থেকে এখন পর্যন্ত এই ভাবেই চলছে। ও এখন অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে, এখন প্রায় ওর ৭ বছর বয়স। কিন্তু ছোট থেকে কখনও আমাকে নিয়ে কোনও অভিযোগ করেনি। প্রতিটা মুহূর্তে ও আমাকে সাপোর্ট করে এসেছে। আমার দিকটা ও বোঝে। তা না হলে এতটা সময় ওকে ছেড়ে, বাইরে কাজ করতে পারতাম না। ও কিন্তু ওর মতো করেই বড় হচ্ছে যাচ্ছে। আর কোথাও গিয়ে এটা আমার আফসোসের একটা জায়গা। মাঝে মাঝে মনে হয় মা হিসেবে ওকে যতটা সময় দেওয়ার দরকার ছিল, আমি ওকে ততটা সময় দিতে পারিনি। বাকি মায়েদের মতো হয়তো আমি ওকে সময় দিতে পারি না।'
তবে অভিনেত্রীর মনে এই নিয়ে খারাপ লাগা থাকলেও, তাঁর মেয়ে কিন্তু সব সময় মায়ের দিকটা বোঝে। মেয়ের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া ও ভালোবাসায় যেন সব আক্ষেপ মিটে যায়। লাভলীর মতে, 'এই জায়গাটা ও বোঝে। জানে যে ওর মা ওয়ার্কিং, আর তা নিয়ে আমার মেয়ে খুব গর্বিতও। ও জানে আমি বাইরেও কাজ করি, বাড়িতেও চেষ্টা করি যতটা পারা যায় ওকে সময় দিতে। আর এই সবটা থেকে আমি মা হিসেবে নিজেকে খুব ভাগ্যবতী বলে মনে করি। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমার মেয়ে ছোট থেকে এখনও পর্যন্ত যেভাবে সবটা মানিয়ে নিয়েছে, আর আমার সঙ্গে যে ভাবে সহযোগিতা করেছে তাতে মা হিসেবে আমি খুব আনন্দিত ও গর্বিত।'
পাশাপাশি মাতৃ দিবসে তিনি সকল মা-কে শুভেচ্ছা জানিয়ে নায়িকা বলেছেন, 'আমি নিজেও একজন মা। আমার সকল মায়েদের আমি এই বিশেষ দিনের শুভেচ্ছা জানাই। আমার নিজের মা, আমার শাশুড়ি মা প্রণাম, আর আমার মেয়েকে অনেক অনেক ভালোবাসা।'
তবে তিনি মনে করেন না যে মাতৃ দিবসের আলাদা করে কোনও প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর কথায়, 'আমার মনে হয় না যে কোনও বিশেষ দিন মায়ের জন্য হয়। মা তো আমাদের প্রথম পৃথিবীর আলো দেখান, সেই জায়গা থেকে প্রতিদিনই আমার কাছে মাতৃ দিবস।'