চেতেশ্বর পূজারা এমন এক ব্যাটসম্যান, যিনি ধৈর্যের চূড়ান্ত নিদর্শন স্থাপন করেছেন। বারবার প্রতিপক্ষকে হতাশ করেছেন ভারতের এই ব্য়াটার। ভারতের অনেক ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ এবং সিরিজ জয়ের পিছনে তাঁর ক্লান্তিকর ও দীর্ঘ ইনিংসগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে। এমনকি তাঁর শৈশব ক্রিকেটেও পূজারার এই মনোযোগ ও দৃঢ়তা প্রতিপক্ষের মাথা ঘামাতে যথেষ্ট ছিল।
সম্প্রতি অবসর নেওয়া ভারতীয় টেস্ট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্মৃতিচারণ করলেন, যখন তিনি প্রথম পূজারার মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেটি ছিল কিশোর বয়সে, তখনকার এক অভিজ্ঞতার কথা বললেন হিটম্যান। পূজারার স্ত্রী পূজা পুবারী লিখিত 'দ্য লাইফ অফ আ ক্রিকেটারস ওয়াইফ' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে রোহিত বলেন, ‘আমি এখনও মনে করতে পারি, আমাদের টিম মিটিংয়ে একটাই বিষয় থাকত — কীভাবে ওকে আউট করা যায়। আর যদি না পারি, তাহলে হয়তো ম্যাচটাই হেরে যাব।’
রোহিত আরও বলেন, ‘যখন আমি ১৪ বছর বয়সে মাঠে যেতাম আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতাম, তখন আমার মুখের রঙই বদলে যেত। কারণ ও সারাদিন ব্যাট করত আর আমরা ২-৩ দিন রোদে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করতাম।’
‘মা, আমি কী করব?’
রোহিত স্মরণ করলেন, পূজারার বিরুদ্ধে দিনের পর দিন ফিল্ডিং করার পর তাঁর মা পর্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়তেন তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে। রোহিত শর্মা বলেন, ‘আমার মা একদিন জিজ্ঞেস করলেন—তুই যখন খেলার জন্য বাড়ি থেকে বেরোস, তখন তোর মুখ দেখে মনেই হয় না পরে যে অবস্থা হবে! ৭-১০ দিন পর ফিরে এসে তোকে দেখে চিন্তায় পড়ে যাই। আমি তখন বলতাম—‘মা, আমি কী করব? একজন ব্যাটসম্যান আছেন নাম চেতেশ্বর পূজারা, উনি তিন দিন ধরে ব্যাট করছেন!’ … এটাই ছিল ওর সম্পর্কে আমাদের প্রথম ছাপ।’
বর্তমানে চেতেশ্বর পূজারা এখনও সৌরাষ্ট্রের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলছেন, যদিও আন্তর্জাতিক অবসর ঘোষণা করেননি—মানে এখনও টেস্ট দলে ফেরার সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে অধিনায়কত্ব তুলে দিয়েছেন শুভমান গিলের হাতে এবং এখন শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে মনোযোগ দিচ্ছেন। পূজারার ধৈর্য আর রোহিতের হাস্যরস মিশে এই স্মৃতিচারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে হয়ে উঠেছে এক অনন্য উপহার।