এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো ফাইনালে দেখা হবে ভারত ও পাকিস্তানের। চলতি এশিয়া কাপে এটি হবে তাদের তৃতীয় সাক্ষাৎ। এর আগের দুটি ম্যাচেই পাকিস্তান বড় ব্যবধানে হেরেছে। এদিকে মাঠের ভিতর নিরামিষ ম্যাচ হলেও আনুষঙ্গিক বিষয়ে উত্তেজনার পারদ চড়েছে এই ম্যাচ ঘিরে। সুপার ফোরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আবার হারিস রউফ এবং সাহিবজাদা ফারহানের উস্কানিমূলক অঙ্গভঙ্গিতে বিতর্ক বেড়েছিল। সেই ঘটনায় বিসিবিআইয়ের তরফ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টের কাছে। এই বিতর্র নিয়ে অবশেষে নীরবতা ভঙ্গ করলেন পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসেন।
আজ, শুক্রবার রউফ এবং ফারহান রিচি রিচার্ডসনের সামনে হাজির হবেন। এই আবহে তাঁদের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা তা দেখার বিষয়। এই আবহে মাইক হেসেন বলেন, 'দেখুন, ক্রিকেটারদের প্রতি আমার বার্তা হল, আমরা ক্রিকেটের দিকে মনোনিবেশ করছি এবং আমরা সেটাই করব। এই বিষয়গুলো (বিতর্ক) সম্পর্কে আপনি হয়ত আমার চেয়ে বেশি জানেন। আমি ক্রিকেট দলের সঙ্গে কাজ করছি। আর যেকোনও অঙ্গভঙ্গির ক্ষেত্রে, সর্বদা কিছু আবেগ থাকে, তাই না? আপনি যখন উচ্চ চাপের খেলার অংশ থাকবেন, তখন আমাদের ফোকাস থাকবে ভালো খেলার দিকে। এটা আমার কাজের একটা অংশ।'
উল্লেখ্য, সুপার ফোরের ম্যাচে সাহিবজাদা ফারহান তাঁর পঞ্চাশ করার পরে বন্দুকের মতো করে ব্যাট ধরে উদযাপন করেছিলেন। এই বছরের শুরুতে কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পাক জঙ্গিরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সাহিজবাদার এই সেলিব্রেশনে বিতর্ক হয়। এবং তাঁর এই অঙ্গভঙ্গি স্পষ্টতই অসংবেদনশীল ছিল। এদিকে হারিস রউফ ভারতীয় দর্শকদের দিকে আঙুল তুলে '৬-০' ইশারা করেছিলেন এবং বিমান ধ্বংস হওয়ারও ইঙ্গিত করেছিলেন হাতে। উল্লেখ্য , পাকিস্তান দাবি করেছিল যে তারা অপারেশন সিঁদুরের সময় তারা ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছিল। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে সেই ভুয়ো দাবি নিয়েই গর্বিত পাকিস্তান। আর ক্রিকেটে না পেরে উঠে সেই ভুয়ো দাবি নিয়েই ভারতীয় সমর্থকদের কটাক্ষ করার চেষ্টা করেছিলেন হারিস।
এর আগে এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে ভারত এবং পাকিস্তানের ম্যাচে পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলায়নি ভারতীয়রা। এই নিয়ে বেজায় চটেছিল পাকিস্তান। এই নিয়ে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল পিসিবি। এমনকী পাইক্রফ্টকে না সরালে পাকিস্তান নিজেরাই এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়াবে বলে হুমকি দেন পিসিবি তথা এসিসি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। পরে অবশ্য আইসিসি স্পষ্ট করে দেয়, পাইক্রফ্টকে সরানো হচ্ছে না। এমনকী সুপার ফোর পর্বে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও পাইক্রফ্টই ছিলেন ম্য়াচ রেফারি। পরে নিজেদের নৈতিক হারকেই 'জয়' হিসেবে দেখানোর জন্য পিসিবি দাবি করে, অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট নাকি ক্ষমা চেয়েছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সলমন আঘার কাছে। তবে ক্রিকবাজের রিপোর্ট অনুযায়ী, পাইক্রফ্ট কোনও ক্ষমা চাননি। তিনি শুধু জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন আঘার কাছে। আর সেটাই 'ক্ষমাপ্রার্থনা' বলে প্রচার করে পিসিবি। এদিকে পাইক্রফ্টের সঙ্গে পাক দলের কর্তাদের বৈঠকের ভিডিয়ো করা নিয়ে আইসিসি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায় পিলিবি।
প্রসঙ্গত, টসের সময় ভারতীয় অধিনায়কের সঙ্গে যাতে করমর্দন না করেন, তার জন্য পাকিস্তানের সলমন আঘাকে বার্তা দিয়েছিলেন পাইক্রফ্ট। প্রকাশ্যে যা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্যেই এই বার্তা পাইক্রফ্ট দিয়েছিলেন সলমনকে। তবে ম্যাচের পর ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মেলায়নি। সেই আবহে পাইক্রফ্টের কাছে অভিযোগ দায়ের করে পাক ম্যানেজার। আর পাইক্রফ্টের নামে আইসিসির কাছে অভিযোগ জানায় পিসিবি। এদিকে এই বিতর্কে ম্যাচ রেফারির কোনও ভূমিকা ছিল না বলে মত আইসিসির।