জি২০ বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করার আহ্বান জানালেন এস বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এই বিষয়ে বললেন, 'বিশ্ব যাতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সহ্য না করে বা সমর্থন না করে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা সন্ত্রাসবাদের জাল ভাঙতে এবং যে কোনও উপায়ে তা ধ্বংস করার জন্য কাজ করছে, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাহায্য করছে।' জয়শঙ্কর বলেন, 'উন্নয়নের জন্য সন্ত্রাসবাদ একটি স্থায়ী হুমকি।'
এদিকে মার্কিন মুলুকে দাঁড়িয়ে জয়শঙ্কর এই মন্তব্য এমন এক সময় করলেন, যেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেখা করলেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান আসিম মুনির এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান যে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ করে চলেছে, সেই নিয়ে একাধিক প্রমাণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত তুলে ধরেছে। এমনকী সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলা এবং তারপরে অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের জঙ্গি যোগ স্পষ্ট হয়ে যায়। পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত জঙ্গিকে হত্যা করে তার কাছ থেকে পাকিস্তানি আইডি পাওয়া যায়। অপরদিকে অপারেশন সিঁদুরে মৃত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাকিস্তানি সেনার আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। যা থেকে সেনা-জঙ্গি যোগ স্পষ্ট হয়। পরে জইশ জঙ্গি নেতাও দাবি করেছিল, আসিম মুনিরের নির্দেশেই জিহাদিদের শেষকৃত্যে এসেছিলেন পাক সেনা আধিকারিকরা। আবার অপারেশন সিঁদুরে ধ্বংস হওয়া জঙ্গি ঘাঁটি নতুন করে নির্মাণের জন্য পাক সরকার সহাায্য করছে জইশ, লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনকে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার কিছুটা আগে হোয়াইট হাউসে পৌঁছেছিলেন। পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলটি সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন। মার্কিন তরফ থেকে এই বৈঠকের কোনও ছবি প্রকাশ করা হয়নি। যেকটি ছবি সামনে এসেছে, তা পাকিস্তানি সাংবাদিকরা প্রকাশ করেছেন। শরিফ ও ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকটি ব্যক্তিগতভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে কোনও মিডিয়াকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। হোয়াইট হাউস সফরের সময় শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। বর্তমান পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউসে এই বৈঠকটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আজকের সম্মেলনে জি২০-র উপযোগিতা বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে জয়শঙ্কর দাবি করেন, বিশ্বে বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে বর্তমানে। বিশেষ করে রাষ্ট্রসংঘের সীমাবদ্ধতার সমালোচনা করে তিনি বলেন যে এই সংস্থা বর্তমান সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম নয়। বিদেশমন্ত্রী বহুপাক্ষিকতার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং জি২০-র ভূমিকা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, 'জি২০-র সদস্য হিসেবে এর স্থিতিশীলতাকে আরও শক্তিশালী করা আমাদের বিশেষ দায়িত্ব। একমাত্র আমরাই একে ইতিবাচক লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এর ফলে, আলাপ-আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং শক্তিশালী শক্তি ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।'