ডিজেল রফতানির উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল রাশিয়া। বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেছে তারা। রাশিয়ান শোধনাগারগুলিতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার জেরে এই সিদ্ধান্ত। এদিকে আগে থেকেই পেট্রোল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল রাশিয়ায়। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বছরের শেষ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জেরে রাশিয়ার তেল পরিশোধন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর থেকে রাশিয়া জ্বালানি রফতানিও কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ডিজেল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা সেকেন্ডারি বিক্রেতাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, উৎপাদকদের জন্য নয়। রাশিয়ান উৎপাদকরা ডিজেল রফতানির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ উত্তর এবং দক্ষিণ পাইপলাইনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়, যা যথাক্রমে বাল্টিক এবং কৃষ্ণ সাগর বন্দরে পৌঁছায় রফতানির জন্য। ২০২৪ সালে, রাশিয়া প্রায় ৮৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন ডিজেল উৎপাদন করেছে এবং প্রায় ৩১ মিলিয়ন টন ডিজেল রফতানি করেছে বলে জানা গেছে। গোটা বিশ্বে সমুদ্রপথে ডিজেল রফতানিকারক দেশগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, পেট্রল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা উৎপাদক এবং সেকেন্ডারি বিক্রেতা, উভয়ের ওপরই প্রযোজ্য। তবে এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে আন্তঃসরকার চুক্তি প্রভাবিত করে না।
রাশিয়া জুড়ে জ্বালানির ঘাটতি ক্রমশ বাড়ছে বলে জানা গেছে। একটি স্থানীয় সংবাদপত্রের মতে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদক সংস্থা লুকোয়েল মস্কোর নির্দিষ্ট ফিলিং স্টেশনগুলিতে জেরি ক্যানে পেট্রল বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সম্প্রতি। ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে অন্যান্য দেশকে রুশ তেল কিনতে বারণ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রেক্ষাপটে জ্বালানি রফতানির ওপর রুশ নিষেধাজ্ঞার ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক এই নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ঘোষণা করে বলেছেন, তেল পণ্যের সামান্য ঘাটতি রয়েছে দেশে। তবে তেলের মজুদ সেই ঘাটতি পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নোভাক বলেন, 'আমরা শিগগিরই পেট্রল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা বছরের শেষ পর্যন্ত বাড়াব এবং অ-উৎপাদকদের জন্য ডিজেল জ্বালানি রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞাও বছরের শেষ পর্যন্ত চালু করা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'এর ফলে আমরা নিজেদের বাজারে আরও বেশি পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ করতে পারব।' এদিকে, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়ার প্রধান সের্গেই আকসিওনভ বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে কিছু তেল শোধনাগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে।