মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানির উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছেন। ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে এই শুল্ক। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা বড় ধাক্কা খেতে পারে। বৃহস্পতিবার এই শুল্ক বৃদ্ধির নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করে ট্রাম্প বলেন, '১ অক্টোবর থেকে আমরা যে কোনও ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের উপর ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করব। যদি কোনও সংস্থা আমেরিকায় তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করে তাহলে এই শুল্ক তাদের ওপর প্রযোজ্য হবে না।'
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য বৃহত্তম বাজার। বিশেষত সাশ্রয়ী মূল্যের জেনেরিক ওষুধের জন্য মার্কিন বাজার ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য বড় গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ২০২৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার ( ₹৩১,৬২৬ কোটি) মূল্যের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রফতানি করে আমেরিকায় এবং ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে আরও ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের ( ₹৩২,৫০৫ কোটি) ওষুধ রফতানি করেছে। ডঃ রেড্ডিস, সান ফার্মা, লুপিন এবং অরবিন্দের মতো সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন বাজারের কম দামের ভারতীয় জেনেরিক ওষুধ রফতানি করে আসছে।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণাটি মূলত ব্র্যান্ডেড এবং পেটেন্ট ওষুধের ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে ভারত থেকে রফতানি হওয়া কমপ্লেক্স জেনেরিক এবং স্পেশালিটি ওষুধগুলির ওপরও এই শুল্কের প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় পণ্য রফতানিকারক সংস্থাগুলি ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে রাশিয়ান তেল ক্রয় অব্যাহত রাখার জন্য ২৫ শতাংশ 'জরিমানা শুল্ক' অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এদিকে ওষুধ ছাড়া আরও বেশ কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপরও গতকাল শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে রান্নাঘরের ক্যাবিনেটে ৫০ শতাংশ, গৃহসজ্জা করা আসবাবপত্রের উপর ৩০ শতাংশ এবং ভারী ট্রাকের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি কর আরোপ করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পৃথক পোস্টে ট্রাম্প আবার লেখেন, 'পিটারবিল্ট, কেনওয়ার্থ, ফ্রেইটলাইনার, ম্যাক ট্রাক এবং অন্যান্য মার্কিন ট্রাক উৎপাদনকারীদের সমর্থন করার জন্য বিশ্বের অন্যত্র তৈরি সমস্ত ভারী (বড়) ট্রাকগুলির উপর এই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।' তিনি বলেছিলেন যে ট্রাকের ওপর এই শুল্ক 'অনেক কারণে, তবে সর্বোপরি জাতীয় নিরাপত্তাই উদ্দেশ্যে!' চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন 'জাতীয় নিরাপত্তার প্রভাব নির্ধারণে' ট্রাক আমদানির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছিল।