রাজ্য জুড়ে আদালতে ঝুলে থাকা বহু মামলা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে বিশেষ মিডিয়েশন ক্যাম্প চলছে। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এই ক্যাম্প। ‘বিশেষ মিডিয়েশন ড্রাইভ, জাতির জন্য মিডিয়েশন’ কর্মসূচির আওতায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আদালতের বাইরে বাদী বিবাদী পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে মামলা সমাধান করা। এই মিডিয়েশন ক্যাম্পে এখনও পর্যন্ত বহু মামলার সমাধান হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ১৪ জনের নাম কেন বাদ চার্জশিট থেকে? তামান্না খুনের তদন্তে অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট
এই প্রক্রিয়ায় বাদী এবং বিবাদীর আবেদন গ্রহণের পর মামলাগুলি চিহ্নিত করা হয়। এরপর প্রশিক্ষিত মিডিয়েটররা বিষয়গুলো নিয়ে সরাসরি পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান নিশ্চিত করছেন। কলকাতা হাইকোর্ট ও রাজ্যের অন্যান্য ৭২টি এডিআর (বিকল্প বিবাদ নিস্পত্তি) কেন্দ্রের মাধ্যমে এই ক্যাম্প চালানো হচ্ছে। মিডিয়েশন সেন্টারের আওতায় বিভিন্ন ধরনের মামলা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে, মীমাংসাযোগ্য ফৌজদারি মামলা, উচ্ছেদ সংক্রান্ত, বন্টন, বিবাহবিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, জমি অধিগ্রহণ ও অন্যান্য দেওয়ানী মামলা। এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য হলো দ্রুত, দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করা। এই ক্যাম্প চলবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ৬ অক্টোবরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে এনিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সৌমেন সেন এবং মিডিয়েশন কমিটির সভাপতি বিচারপতি শ্রী অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলা এই উদ্যোগে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের অরিজিনাল সাইডের রেজিস্ট্রার ইনসলভেনসি এবং মিডিয়েশন ও কনসিলিয়েশন কমিটির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ড: শুভাশিস মুহুরী জানিয়েছেন, রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলোতে ২২ হাজারের বেশি মামলা এবং কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় ১৮০টি মামলা মিডিয়েশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে, যার অধিকাংশ ইতিমধ্যেই সমাধানের মুখ দেখেছে।
সাংবাদিক ও কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন কলকাতা হাইকোর্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘মিডিয়েটর’ হিসেবে এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কমিটির মাধ্যমে আদালতের বাইরে সমঝোতার পথ তৈরি হওয়ায় বিচারাধীন মামলা দ্রুত ও কার্যকরভাবে নিষ্পত্তি পাচ্ছে, যা রাজ্যের বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা ও জনগণের আস্থা বাড়াচ্ছে। রাজ্য জুড়ে এই বিশেষ মিডিয়েশন ক্যাম্প প্রমাণ করছে যে, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করলে সময় ও সম্পদের সাশ্রয় সম্ভব, পাশাপাশি বিচারপ্রক্রিয়ার উপর চাপও কমানো যায়।