ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআরকে সামনে রেখে পরিযায়ী শ্রমিক ও ভিনরাজ্যে কর্মরত বাংলার ভোটারদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। লক্ষ্য একটাই দেশের প্রতিটি নাগরিক যেন শুধু এক জায়গাতেই ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত থাকেন। কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ বছর যে ফর্ম দেওয়া হবে, তাতে পরিযায়ীদের জন্য আলাদা একটি অংশ রাখা হচ্ছে। সেখানে লিখিতভাবে জানাতে হবে যে তাঁরা শুধু পশ্চিমবঙ্গের ভোটার এবং অন্য কোনও রাজ্যের তালিকায় তাঁদের নাম নেই। একই সঙ্গে কমিশনের পরিকল্পনা, যারা কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন, তাঁদের থেকে আলাদা ঘোষণাপত্র নেওয়া হবে। সেখানে স্পষ্ট করতে হবে, ওই রাজ্যে তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত নেই এবং শুধু বাংলাতেই তাঁরা ভোটার হিসেবে থাকতে চান।
আরও পড়ুন: বাংলার আগেই SIR শুরু অন্যত্র, আধার কি গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন? কী জানা যাচ্ছে?
পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই ফর্ম ছাপার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭.৬৫ কোটি। কমিশনের নির্দেশ প্রতিটি ভোটারের জন্য দুই কপি ফর্ম ছাপাতে হবে। অর্থাৎ প্রায় ১৫ কোটি ফর্ম ছাপানো হবে। এক কপি ভোটারের কাছে থাকবে, আরেক কপি বুথ লেভেল অফিসার সংগ্রহ করবেন। অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই সমীক্ষার কাজ শুরু হতে পারে। ২০০২ সালের পর এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর হচ্ছে। গতবারের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্যে তালিকা প্রকাশের নির্দেশও দিয়েছে কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে সেই কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, বাড়ি-বাড়ি ফর্ম পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনেও ফর্ম পূরণের সুযোগ থাকবে। ফর্মে একটি কিউআর কোড দেওয়া থাকবে, যার মাধ্যমে অনলাইন আবেদন সম্ভব হবে। তবে এখন পর্যন্ত খবর, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে আলাদা কোনও অতিরিক্ত নথি চাইবে না কমিশন। যাঁদের নাম বা তাঁদের বাবা-মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে, তাঁদের শুধু এপিক নম্বর ও পার্ট নম্বর দিলেই হবে। যদি শুধু বাবা-মায়ের নাম থাকে, তাহলে ১২টি নির্ধারিত নথির (আধার কার্ড-সহ) যেকোনও একটি জমা দিতে হবে। তবে যাঁদের নাম বা তাঁদের বাবা-মায়ের নাম কোনও তালিকাতেই নেই, তাঁদের জন্য কমিশন আলাদা নিয়ম ঘোষণা করবে।
কমিশনের প্রাথমিক অনুমান, পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। তবে বাস্তবে সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে। শুধু কোভিড অতিমারির সময়েই প্রায় ৪০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে রাজ্যে ফিরিয়ে এনেছিল সরকার। তাই এবার তাঁদের কথা মাথায় রেখেই সমীক্ষায় বিশেষ নজর দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।