ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট দাবি করলেন, ভারতের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক পরোক্ষভাবে প্রভাব পড়ছে রাশিয়ার ওপর। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তাঁর ইউক্রেন সম্পর্কে নীতি এবং অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছেন। রুটের মন্তব্যের বিষয়ে ভারত বা রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় আমেরিকা। রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভরতের ওপর এই শুল্ক 'শাস্তি' হিসেবে চাপানো হয়। এই আবহে বর্তমানে ভারতের পণ্যের ওপর মার্কিন আমদানি শুল্ক ৫০ শতাংশ রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুট বলেন, 'ভারতের ওপর ট্রাম্পের শুল্কে রাশিয়ার ওপর বড় প্রভাব পড়ছে। পুতিনের সঙ্গে দিল্লি ফোনে কথা বলছে এবং নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ইউক্রেন নিয়ে তাঁর কৌশল ব্যাখ্যা করতে বলছেন। কারণ ভারত শুল্ক আরোপের শিকার হচ্ছে।'
এদিকে রাশিয়ার থেকে তেল কেনা ইস্যুতে ভারতের সমালোচনা করার বিষয়ে পশ্চিমাদের দ্বিচারিতার তীব্র নিন্দা করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। নিউইয়র্কে জি২০ সদস্য দেশগুলির মধ্যে এক বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, 'আমরা শান্তির মাধ্যমে উন্নয়ন আনতে পারি, কিন্তু উন্নয়নকে বিপন্ন করে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি না। উন্নয়নের মাধ্যমেই শান্তি আসতে পারে। জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাণিজ্যকে আরও অনিশ্চিত করে তোলা হলে কারও কোনও উপকার হবে না। ইতিমধ্যে একটি ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে রয়েছে জ্বালানি বাণিজ্য। তাই যেকোনও ইস্যু সংলাপ, কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। এতে জটিলতা যুক্ত করা ঠিক নয়।'
গতকাল আবার তুরস্ককে রাশিয়ান তেল কেনা কমানোর বার্তা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উল্লেখ্য, তুরস্ক ন্যাটো সদস্য। এই আবহে তুর্কি রাষ্ট্রপ্রধান এরদোগানকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করা খুবই জরুরি। আমি চাই রাশিয়া যতদিন ইউক্রেনে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ততদিন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করুক তুরস্ক।' ট্রাম্প এরদোগান সম্পর্কে বলেন, 'রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উভয়েই এরদোগানকে সম্মান করেন। আমি মনে করি, তিনি চাইলে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারেন।' এদিকে ট্রাম্প বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে আলোচনা সফল হলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়ে তুরস্কের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবিলম্বে শেষ হতে পারে।
এর আগে সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য সচিব স্কট বেসেন্ট ভারত নিয়ে সুর কিছুটা নরম করেন। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনা কমাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এরই সঙ্গে তিনি ইউরোপীয় দেশগুলিতে তোপ দেগে বলেন, 'ভারতে শোধিত রাশিয়ান তেল কিনছে ইউরোপ। ইউরোপ নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অর্থায়ন করছে।'