গত বছর ক্যালিফোর্নিয়ায় একাধিক গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের অভিযোগে অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা এক ভারতীয় ট্রাকচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মাসেই ফ্লোরিডায় একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর বাণিজ্যিক ট্রাকচালকদের জন্য কর্মী ভিসা তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই দুর্ঘটনায়ও উঠে আসে এক ভারতীয় ট্রাকচালকের নাম।
সূত্রের খবর, গত মাসে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) ভারতীয় ট্রাকচালক প্রতাপ সিংকে গ্রেফতার করেছে। অভিবাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে আইসিই হেফাজতে রাখা হবে। আইসিই জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে, প্রতাপ সিং ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি বাণিজ্যিক ১৮ চাকার গাড়ি চালানোর সময় তাঁর একাধিক গাড়ির সংঘর্ষ হয়। বৃহস্পতিবার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রতাপ সিং ২০২২ সালের অক্টোবরে অবৈধভাবে দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিল এবং জো বাইডেন প্রশাসন তাঁকে দেশে 'মুক্ত' করেছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের দফতর থেকে প্রতাপ সিংকে বাণিজ্যিক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
প্রতাপ সিংয়ের দুর্ঘটনার জেরে পাঁচ বছর বয়সি ডালিলা কোলম্যান গুরুতর আহত হয়। যার জেরে তার জীবন সম্পূর্ণ বদলে যায়। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সংঘর্ষের ফলে কোলম্যানের সৎ বাবা মাইকেল ক্রাউসকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর শিশুটিকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমানে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আরও বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোলম্যানের বাবা জানান, দুর্ঘটনার জেরে তাঁর সন্তান স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে, কথা বলতে, মুখ দিয়ে খেতে বা কিন্ডারগার্টেনে যেতে অক্ষম হয়ে পড়ে। ওই শিশুটি তিন সপ্তাহ ধরে কোমায় ছিল এবং ছয় মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। হাসপাতালে থাকাকালীন, তার ক্র্যানিয়েক্টমি করা হয়।শিশুটিকে সারা জীবন থেরাপির মধ্যে থাকতে হবে।
এর আগে আগস্ট মাসে ভারতীয় যুবক হরজিন্দর সিংকে গ্রেফতার করেছিল মার্কিন পুলিশ।২৮ বছর বয়সি হরজিন্দরের বাড়ি পাঞ্জাবে। কয়েক বছর আগে ট্রাকচালক হিসাবে ভিসা এবং লাইসেন্স পেয়ে ক্যালিফর্নিয়ায় থাকতে শুরু করেছিলেন। অভিযোগ, গত ১২ আগস্ট ফ্লরিডার টার্নপাইকে তিনি ট্রাক নিয়ে যাওয়ার সময় এক সিগন্যালে ভুল করে ‘ইউটার্ন’ নেন। সেই সময় পিছন থেকে আসা গাড়ি ধাক্কা মারলে তিন জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর হরজিন্দর ক্যালিফর্নিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে আবার ফ্লরিডায় নিয়ে আসে পুলিশ। মার্কিন আইন অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হয়। যেহেতু, ফ্লরিডার দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, তাই হরজিন্দরের সব মিলিয়ে ৪৫ বছরের কারাবাসের সাজা হতে পারে।