ম্যাচের একেবারে প্রথম বলেই মহম্মদ শামি ট্র্যাভিস হোডের ফিরতি ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন। শুরুতেই ধাক্কা খাওয়ার পরে তুলনায় সতর্ক দেখায় হেডকে। অজি তারকা শুরু থেকে ধ্বংসাত্মক মেজাজে রান তোলার জন্য পরিচিত। তবে ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে একসময় ১১ বল খেলে মাত্র ১ রান সংগ্রহ করেন হেড। তিনি ১২তম বলে প্রথম বাউন্ডারি মারেন।
প্রথমত, সেমিফাইনালে ভারতের সব থেকে বড় ভয় ছিল ট্র্যাভিস হেডকে নিয়ে। কেননা সাম্প্রতিক সময়ে বড় মঞ্চে হেড বারবার ভারতের কাছ থেকে একার হাতে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। সুতরাং, সেমিফাইনালে হেডকে তাড়াতাড়ি সাজঘরে ফেরানোই ছিল ভারতের আসল লক্ষ্য।
হেডকে ফেরাতে বরুণ চক্রবর্তীই যে টিম ইন্ডিয়ার সেরা হাতিয়ার হতে পারেন, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। রবিচন্দ্রন অশ্বিন থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, হরভজন সিং থেকে সুরেশ রায়না, সকলেরই ধারণা ছিল যে, বরুণ চক্রবর্তীই হেডকে তড়িঘড়ি সাজঘরে ফেরাতে পারেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কাছেও সেটা অজানা ছিল না। তা সত্ত্বেও রোহিত শর্মা সেমিফাইনালে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন, যা দেখে রেগে লাল হরভজন সিং। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় তিনি সরাসরি দাবিও করে বসেন যে, তাহলে বরুণ চক্রবর্তীকে প্রথম একাদশে রেখে লাভ কী হল?
আসলে প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে ট্র্যাভিস হেড ব্যাট চালাতে শুরু করেছিলেন। ভাগ্যও তাঁর সঙ্গ দিচ্ছিল। হেড কার্যত ক্রিজে সেটও হয়ে যান। তাই ভাজ্জি চাইছিলেন যে, ভারতীয় দল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বরুণকে বোলিং আক্রমণে নিয়ে আসুক। কেননা হেড সেট হয়ে গেলে তাঁকে ফেরানোর কোনও উপায়ই থাকবে না ভারতীয় দলের সামনে। ট্র্যাভিস মারতে শুরু করলে যে বরুণকেও ছাড়বেন না, সেই আশঙ্কা ছিলই।
তা সত্ত্বেও রোহিত শর্মা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে স্পিন আক্রমণ শুরু করেন কুলদীপ যাদবকে দিয়ে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে কুলদীপ ফের বল করতে এলে হেড তাঁকে একটি ছক্কা হাঁকান। শেষমেশ নবম ওভারে বরুণ প্রথমবার বল করতে এসে নিজের দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন হেডের উইকেট। স্বস্তি পায় ভারতীয় শিবির। যদিও সাজঘরে ফেরার আগে ট্র্যাভিস হেড ৫টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ বলে ৩৯ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেন।
রাগের মাথায় ভজ্জি কী বলেন?
রোহিত শর্মা বরুণকে বোলিং আক্রমণে নিয়ে আসতে দেরি করছেন দেখে ভাজ্জি বলেন, ‘তাহলে বরুণকে কখন বল করতে পাঠানো হবে? ট্র্যাভিস হেডকে বল করার জন্য বরুণকে কেন ৯ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? এত দেরিতে বরুণকে পাঠিয়ে হেডকে সেট হতে সময় দেওয়ার যুক্তি কী? ভারতীয় দলের উচিত ছিল নতুন বলে একপ্রান্ত দিয়ে শামিকে আর অন্য প্রান্ত দিয়ে বরুণকে আক্রমণে নিয়ে আসা। ট্র্যাভিস সেট হয়ে যাওয়ার পরে বরুণকে বল করতে পাঠানো হয়। এই ৩৯ রানই ম্যাচে তফাৎ গড়ে দিতে পারে।’