ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে সিলিকোসিসে আক্রান্ত বাংলার অনেক পরিযায়ী শ্রমিক। এবার এই শ্রমিকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সিলিকোসিসে আক্রান্ত শ্রমিকদের জন্য শ্রম দফতরের অধীনে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল পোর্টাল তৈরি করছে রাজ্য সরকার। লক্ষ্য হল শ্রমিকদের রোগনির্ণয়, চিকিৎসা ও আর্থিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ করা।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে চিকিৎসার মাঝেই মৃত্যু সিলিকোসিস রোগীর, কী এই ভয়ঙ্কর রোগ? জেনে নিন
সূত্রের খবর, ওয়েবেল টেকনোলজি লিমিটেড ইতিমধ্যে এই পোর্টাল তৈরির জন্য ই-টেন্ডার আহ্বান করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই পোর্টালটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, সিলিকোসিস একটি গুরুতর ফুসফুসজনিত রোগ, যা দীর্ঘ সময় ধরে অতি সূক্ষ্ম ধুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের ফলে হয়। এই রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ কর্মীই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক। তাঁদের পক্ষে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে
নতুন ডিজিটাল পোর্টালটি চালু হলে সিলিকোসিস আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবার অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে পারবেন। নথি আপলোড করতে পারবেন এবং আবেদন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি রিয়েল-টাইমে জানতে পারবেন। এই পোর্টালে আবেদনকারীদের আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক বিবরণ ও রোগ নির্ণয়ের শংসাপত্র ডিজিটালি যাচাই হবে। শ্রম দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই পোর্টালের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা একাধিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর মধ্যে থাকবে
পুনর্বাসন সহায়তা, ভাতা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সহায়তা, সন্তানের শিক্ষা সহায়তা, কন্যার বিবাহ সহায়তা প্রভৃতি। এছাড়া, রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গেও এই পোর্টাল সংযুক্ত থাকবে। সহায়তার অর্থ সঠিক সময়ে ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সরাসরি উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। পোর্টালটি শুধু সুবিধাভোগীদেরই নয়, শ্রম কমিশনারের কার্যালয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও ইএসআই (এমবি)-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের ক্ষেত্রে মনিটরিং ব্যবস্থার সুযোগ এনে দেবে। মাসভিত্তিক অর্থপ্রদানের হিসাব, রিপোর্ট, বকেয়া আবেদন সংক্রান্ত ড্যাশবোর্ডও থাকছে এই ব্যবস্থায়।
শ্রম দফতরের কর্মকর্তার কথায়, এই পোর্টাল সিলিকোসিস সংক্রান্ত সাহায্যের প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল, সহজ এবং স্বচ্ছ করে তুলবে। এটি এক ডিজিটাল রূপান্তরের দিশা দেখাবে। শ্রমিক কল্যাণে প্রশাসনের এই প্রয়াস ভবিষ্যতে গোটা দেশে স্বাস্থ্য ও শ্রমক্ষেত্রের অন্যান্য কল্যাণ প্রকল্পগুলির জন্য একটি রোল মডেল হিসেবেও কাজ করতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন।