এক দুর্দান্ত জয় দিয়ে কলিঙ্গ সুপার কাপ ২০২৫-এর যাত্রা শুরু করল কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল এফসিকে ২-০ হারিয়ে কলিঙ্গ সুপার কাপ ২০২৫-এর অভিযান শুরু করল কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল এফসিকে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গা স্টেডিয়ামে পরাজিত করে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে নোহারা। এবার তাদের প্রতিপক্ষ মোহনবাগান। ২৬ এপ্রিল কোয়ার্টার ফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে কেরালা ব্লাস্টার্স।
তবে এদিনের ম্যাচের পরে ইস্টবেঙ্গলের খেলা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। যেভাবে ইস্টবেঙ্গল এদিন খেলেছে তাতে ফুটবলারদের মধ্যে তেমন কোনও তাগিদই দেখা যায়নি। এদিনের ম্যাচের প্রথম থেকেই ডমিনেট করেছে কেরালা ব্লাস্টার্স। ম্য়াচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল হজম করতে পারত ইস্টবেঙ্গল, কিন্তু কেরালার ভাগ্য খারাপ থাকায় সেই গোল হয়নি। তবে এরপরেও কোনও ভাবেই ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে তুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচ হারের পরে কী বললেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোচ অস্কার ব্রুজো?
এদিনের ম্যাচের পরে দলের খেলা নিয়ে নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কোচ অস্কার ব্রুজো। ছেলেদের খেলায় একেবারেই খুশি ছিলেন না ব্রুজো। ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘খুব হতাশা জনক রেজাল্ট। প্রথমেই বলে দিতে চাই যা হয়েছে তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে চাই।’ ছেলেদের খেলা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ওদের মানসিকতা দেখে সত্যি খারাপ লেগেছে। ওদের পারফরমেন্সও খুবই খারাপ ছিল। খেলার মানটাও খুবই হতাশা জনক ছিল।’
আরও পড়ুন … ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ হারিয়ে শেষ আটে মোহনবাগানের সামনে কেরালা
কেরালা ব্লাস্টার্স দলটি নতুন প্রধান কোচ ডেভিড কাতালার অধীনে খেলতে নেমেছিল। জেসুস জিমেনেজ ও নোয়া সাদাউইয়ের করা দুইটি গোল এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদিকে ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজো তিনজন সেন্টার ব্যাক নিয়ে দল সাজান এবং পি ভি বিষ্ণু ও মহম্মদ রাকিপকে উইং-ব্যাক হিসেবে খেলান। অন্যদিকে, কাতালা অধিনায়ক অ্যাড্রিয়ান লুনাকে মিডফিল্ডের কেন্দ্রে রাখেন এবং দানিশ ফারুককে জিমেনেজের ঠিক পিছনে খেলান।
কেরালা ব্লাস্টার্স শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল। দ্বিতীয় মিনিটেই সাদাউই নিখুঁতভাবে বল বাড়ান জিমেনেজের জন্য, কিন্তু স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ঠিকভাবে শট নিতে ব্যর্থ হন। সপ্তম মিনিটে ইস্টবেঙ্গল পাল্টা আক্রমণে যায়, যেখানে দিমিত্রিয়োস দিয়ামান্তাকোসের পাস থেকে রিচার্ড সেলিস অল্পের জন্য গোল মিস করেন। ম্যাচ ধীরে ধীরে ভারসাম্যপূর্ণ হয়, কিন্তু সাদাউই ডান পাশ দিয়ে বারবার হুমকি তৈরি করে যাচ্ছিলেন। ৩৪তম মিনিটে তিনি হিমেনেজকে আরেকটি সুযোগ করে দেন, কিন্তু তিনি আবারও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন।
আরও পড়ুন … ঘরের মাঠের হার, বদলা নিল কোহলির RCB, শ্রেয়সের PBKS-কে হারাল সাত উইকেটে
বিরতির পাঁচ মিনিট আগে সাদাউইকে বক্সের ভেতর আনোয়ার আলি ফাউল করলে কেরালা একটি পেনাল্টি পায়। প্রথম শটটি ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন সিং গিল সেভ করলেও, গোলরক্ষকের লাইনে আগে এগিয়ে যাওয়ার কারণে রিফারি পুনরায় পেনাল্টি দিতে বলেন। দ্বিতীয়বার হিমেনেজ গোল করতে ভুল করেননি, যদিও গিল বল স্পর্শ করেছিলেন।
বিরতির ঠিক আগে ইস্টবেঙ্গলের সমতায় ফেরার বড় সুযোগ আসে, যখন বিষ্ণুর জোরালো শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে এবং রাফায়েল মেসি বৌলি সেই রিবাউন্ড থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। প্রথমার্ধ শেষ হয় কেরালা ব্লাস্টার্সের ১-০ ব্যবধানে লিড নিয়ে।
আরও পড়ুন … ওরা তো ছুটি কাটাতে আসে, মজা করে তারপর… দুই বিদেশি ক্রিকেটারের সমালোচনায় সেহওয়াগ
বিরতির পর ব্রুজো অধিনায়ক সাউল ক্রেসপো ও নিশু কুমারকে মাঠে নামান, কিন্তু তাদের রক্ষণভাগ ভাঙতে হিমশিম খায় ইস্টবেঙ্গল। অন্যদিকে, কাতালার দল প্রতি-আক্রমণে আগ্রাসী থাকে। ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর অধিনায়ক লুনা ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়লে ফ্রেডি মাঠে নামেন, তবে দলের গতি কমে না। ৬৪তম মিনিটে সাদাউই দূর থেকে বাঁ পায়ের এক দুর্দান্ত শটে বল ক্রসবারে মেরে গোললাইনের ওপারে যায়—গিলের কিছু করার ছিল না। কেরালার লিড তখন ২-০।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।