ফ্রেঞ্চ ওপেন নিজের দখলে রেখেছিলেন। উইম্বলডনের ফাইনালে মহাকাব্যিক লড়াইয়ের পরেও হারতে হয়েছিল। ইউএস ওপেন ছিল এক অর্থে প্রতিশোধের, বৃহত্তর চোখে নিজের রাজপাট বিস্তারের। দুটো কাজই দাপটের সঙ্গে করে দেখালেন বছর বাইশের কার্লোস আলকারাজ। ইয়ানিক সিনারকে হারিয়ে সাম্প্রতিকতম টেনিসের চর্চিত দ্বৈরথ জিতে নিয়ে স্পেনীয় তারকা বুঝিয়ে দিলেন, হেভিওয়েট প্রতিপক্ষের থেকে তিনি কোথায় এগিয়ে।কিন্তু স্প্যানিশ তারকার এই জয়ে কি খুশি নন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? আসলে আলকারেজের জয়ের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল, এমনই প্রশ্ন উঠেছে।
ইউএস ওপেন ফাইনাল শুরু হয় কিছুটা দেরিতে। কারণটা অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই। ফাইনালযুদ্ধ দেখতে তিনিও হাজির হয়েছিলেন স্টেডিয়ামে।তাঁর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আঁটসাঁট। অতিরিক্ত চেকিংয়ের কারণে হাজার হাজার দর্শক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন। তাই খেলাও শুরু হয় প্রায় আধ ঘণ্টা দেরিতে। ট্রাম্পকে প্রথম সেটের পর স্ক্রিনে দেখানো হলে দর্শকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান-হাততালির পাশাপাশি শোনা যায় বিদ্রুপের শিসও। বস্তুত, ২০০০ সালে বিল ক্লিনটনের পর এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউএস ওপেনে উপস্থিত হলেন। তবে কোর্টের বাইরে যাই ঘটে যাক না কেন, র্যাকেট হাতে কোনও দ্বিধার জায়গা রাখেননি আলকারাজ। বৃষ্টির কারণে ছাদবন্ধ অবস্থায় খেলা শুরু হলে গোড়া থেকেই দাপট ধরে রাখেন।শেষ পর্যন্ত ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ ব্যবধানে সিনারকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হন ২২ বছরের তারকা। আর এই ঐতিহাসিক ম্যাচের পর গোটা স্টেডিয়াম যখন উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিচ্ছে, সেই সময় বেজার মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। তাঁর এই প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপরেই নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি স্প্যানিশ তারকার জয়ে খুশি নন ট্রাম্প?
এখানেই শেষ নয়। ২ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের লড়াই শেষ করে বিজয়ের হাসি হেসেছেন আলকারাজ। কিছুক্ষণ পর দেখা যায় বিখ্যাত সেই ‘গলফ সুইং’ সেলিব্রেশনও। এরপর গ্যালারির দিকে ছুটে যান স্প্যানিশ তারকা। সেখানে ছিলেন তাঁর কোচ এবং পরিজনরা। ঠিক সেই সময় ক্যামেরায় ধরা পড়েন গোমড়ামুখো ট্রাম্প। সবাই যখন করতালিতে ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়নকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখে হাসি নেই। এমনকী করতালি দিতেও দেখা জানায়নি তাঁকে। কোর্টে যখন ইতিহাস তৈরি করেছেন আলকারেজ, তখন ট্রাম্পকে ভারাক্রান্ত মুখে ব্লেজার ঠিক করতে দেখা গিয়েছে।ট্রাম্পের এমন প্রতিক্রিয়া ভাইরাল হতেই হতবাক নেটদুনিয়া।
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘ট্রাম্প হয়তো খুশি নন। তিনি বোধহয় চেয়েছিলেন ইয়ানিক জিতুক।’ আরেকজন আবার বলেছেন, ‘উনি কি জানেন আলকারেজ মেস্কিকান নাকি স্প্যানিশ?’ অন্য একজন বলেন, ‘ট্রাম্প আজকাল কারওর উপরেই খুশি নন। এটাই এখন সব কিছুর উপর তাঁর স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।’ আরেক ইউজারের কথায়, ‘আলকারাজের প্রতি ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া হাস্যকর।’ কেউ লিখেছেন, ‘সিনারের উপর বাজি রেখেছিলেন ট্রাম্প। নাহলে কেন আলকারেজের জয় সেলিব্রেট করছিলেন না?’ অন্য একজন রসিকতা করে লেখেন, ‘আশা করব স্পেনের উপর শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেবেন না ট্রাম্প।’
কার্লোস আলকারাজের বক্তব্য
আলকারাজ ম্যাচ শেষে তৃপ্ত। তিনি বলেন, ‘আবারও ইউএস ওপেন ফাইনালে জিতে দারুণ লাগছে। আমার কাছে এর গুরুত্ব অনেক। হয়তো আজ টুর্নামেন্টের সেরা খেলা হয়নি, কিন্তু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মান ধরে রাখতে পেরেছি। সার্ভ আজ খুব ভাল ছিল, সেটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, 'আমার পরিবারের থেকেও অনেক বেশি কাছের তুমি। তোমার সঙ্গে কোর্ট এবং লকার রুম ভাগ করে নিতে দারুণ লাগে। অনেক কিছুই শিখেছি তোমার কাছে। আমাদের এই দ্বৈরথ দু’জনকেই আরও ভালো খেলোয়াড় হতে সহযোগিতা করেছে।' অন্যদিকে সিনার বলেন, 'যোগ্য খেলোয়াড় হিসাবেই ইউএস ওপেন জিতেছে আলকারেজ। ওকে অনেক শুভেচ্ছা। আমার থেকে অনেক ভালো খেলেছ। তবে আমিও আমার সেরাটাই দিয়েছিলাম।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।