অভিনেতা শেখর সুমন তাঁর প্রয়াত ছেলে আয়ুষ সুমন এবং ছেলের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে একটি দীর্ঘ নোট ভাগ করে নিলেন। ইনস্টাগ্রামে শেখর বলেছেন যে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অলকা ‘বহু বছর ধরে মারাত্মক হতাশায় ভুগেছেন’। সঙ্গে শেখর জানান যে, তাঁর ছেলে অধ্যয়ন সুমন বর্তমানে তাঁদের শক্তির উৎস এবং তাঁদের বেঁচে থাকার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শেখর নিজের, বউ অলকার এবং অল্প বয়সী অধ্যয়ন সুমনের নিয়ে একটি পুরনো পারিবারিক ছবিওপোস্ট করেছেন। যেখানে শেখর এবং অধ্যয়নকে কালো পোশাকে দেখা যাচ্ছে, সেখানে অলকা পরে আছেন সালোয়ার। পোস্টটি শেয়ার করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ থেকে বেরিয়ে এসেছি, আমাদের বড় ছেলে আয়ুষকে একটি বিরল হৃদরোগে হারিয়েছি। পরিস্থিতি খুব কঠিন ছিল। অলকা এবং আমি বহু বছর ধরে মারাত্মক হতাশায় ভুগেছি। অধ্যয়ন আমাদের শক্তির উৎস ছিল এবং আছে। সে আমাদের বেঁচে থাকার কারণ হয়ে উঠেছে।’
শেখর তাঁর এই পোস্টে আরও লেখেন যে, যখন আয়ুষ মারা যায়, তখন তিনি ভেঙে পড়েছিলেন, কিন্তু অলকা তাঁর চেয়ে ‘শক্ত’ ছিলেন। ‘আমরা ওর (ছোট ছেলে অধ্যয়ন) মধ্যে আয়ুষকে দেখি। অ্যাডি এই দুঃখের গভীরতা বোঝার জন্য খুব ছোট ছিল। অলকা আমার চেয়ে শক্ত ছিল। আমি ভেঙে পড়েছিলাম এবং বাঁচতে চাইনি। কিন্তু অলকা আমাকে সামলেছে। বলা ভালো, জিব্রাল্টারের শিলার মতো দাঁড়িয়ে পরিবারকে ধরে রেখেছে।’
একজন অনুরাগী এই পোস্টে মন্তব্য করেছেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে যায়, যখনই আমি ভাবি যে যে মানুষটি ভারতীয় টেলিভিশনের অন্যতম সেরা কমেডি নাটক 'দেখ ভাই দেখ'-এ আমাদের হাসিয়েছিলেন, তিনি এত বড় ব্যক্তিগত দুঃখের শিকার হয়েছিলেন।’
গত বছর এক সাক্ষাৎকারে শেখর সেই সময়ের কথা বলেছিলেন যখন তাঁর বড় ছেলে আয়ুষের এন্ডোমায়োকার্ডিয়াল ফাইব্রোসিস (ইএমএফ) ধরা পড়েছিল। ‘পরীক্ষা করার পর আমরা জানতে পারি যে তার এন্ডোমায়োকার্ডিয়াল ফাইব্রোসিস (ইএমএফ) হয়েছে, এটি বিরল। আমাদের বলা হয়েছিল যে সে আর মাত্র ৮ মাস বাঁচবে; আমাদের মনে হয়েছিল আমরাও মারা যাব। ও এরপর মাত্র চার বছর বেঁচে ছিল’
শেখর এই সাক্ষাৎকারে আরও বলেছলেন, ‘এমন কোনো ধর্মীয় স্থান নেই যেখানে আমি যাইনি বা এমন কোনো ওষুধ নেই যা আমি চেষ্টা করিনি। সন্তানের মৃতদেহ দেখার চেয়ে বেদনাদায়ক আর কিছুই হতে পারে না; সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ক্ষত আরও গভীর হয়েছে’। ১৯৯৫ সালের ৩ এপ্রিল ১১ বছর বয়সে আয়ুষ মারা যায়।