কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর এই সব মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের কাঁধ থেকে দায় ঝেরে ফেলল রাজ্য সরকার। এই সব মৃত্যুর জন্য সরাসরি সিইএসসিকে দায়ী করলেন মমতা। নিউজ ১৮ বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, 'এর দায় সিইএসসি-কে নিতে হবে। এখনই তারা জরুরি ভিত্তিতে কর্মীদের নামাক। এখানে ব্যবসা করছে। আর পরিকাঠামো আধুনিকীকরণের কাজ করছে রাজস্থানে। আর এখানে আধুনিকীকরণের কাজ করছে না। বলতে বলতে আমার মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে।' এদিকে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে মমতা দাবি করেন, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সিইএসসি-কে। এদিকে মৃতদের পরিবারের সদস্যকে চাকরিও দিতে হবে বলে সিইএসসির উদ্দেশে বার্তা মমতার। (আরও পড়ুন: গতকাল কলকাতার কোথায় কত বৃষ্টি হল? আজও কি শহরে ভারী বৃষ্টি হতে চলেছে?)
আরও পড়ুন: '...পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে', পুজোর আগে জমা জল নিয়ে অকপট কলকাতা পুরসভা
উল্লেখ্য, সারারাত অবিরাম বৃষ্টিতে কলকাতা বিপর্যস্ত। এই বিপর্যয়ে একের পর এক মৃত্যু ঘটেছে শহরে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নেতাজিনগরে, কালিকাপুরে, বালিগঞ্জ প্লেস, বেনিয়াপুকুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে পথ চলতি মানুষেরা। পরিস্থিতি এমনই, বেশ কিছু জায়গায় মৃতদেহ উদ্ধারও করা যাচ্ছে না জল জমে থাকার কারণে। জমা জলের ওপরেই পড়ে থেকেছে দেহ। এই আবহে জায়গায় জায়গায় খোলা মিটার বক্স বা ল্যাম্পপোস্ট থেকে ছেঁড়া তার আতঙ্ক বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। (আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে শিয়ালদা থেকে বহু রুটে বন্ধ লোকাল, বাতিল ট্রেন, ব্যাহত মেট্রো চলাচল)
জানা গিয়েছে, নেতাজিনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক সাইকেল আরোহী ফল বিক্রেতার। তাঁর দেহ রাস্তায় জমা জলের ওপরে পড়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। শর্ট সার্কিট হয়ে থাকায় দমকল সেখানে ঢুকতে পারেনি দেহ উদ্ধার করতে। এই আবহে সিইএসসি-কে খবর দেওয়া হয় এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য। এদিকে নেতাজিনগর ছাড়াও বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কালিকাপুর, বালিগঞ্জ প্লেস, বেনিয়াপুকুরেও। বেনিয়াপুকুরে একটি নামী মিষ্টির দোকানের সামনে থেকে উদ্ধার হয় মৃত ব্যক্তির দেহ। এদিকে হরিদেবপুর কবরডাঙ্গায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। বেহালা ও গড়িয়াহাটেও প্রাণ গিয়েছে ২ জনের।
উল্লেখ্য, রাতভর নাগাড়ে বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা এবং এলাকা এখন জলমগ্ন। এজেসি বোস রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত সড়কে হাঁটু জল। সেখানে ট্যাক্সি বা ছোট কোনও যানবাহন চলতেই পারছে না। অবশ্য শুধু কলকাতা নয়, গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই গতকাল রাতে অবিরাম বৃষ্টি হয়েছে। আর সেই বৃষ্টির 'ফলাফল' দেখা যাচ্ছে সকালের আলো ফোটার পরে। কলকাতার বহু অঞ্চলে মানুষের বাড়িতে জল পর্যন্ত ঢুকে গিয়েছে। সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৪টে পর্যন্ত নিকাশি পাম্পিং স্টেশন ভিত্তিক বৃষ্টিপাতের পরিমাপ অনুযায়ী, মানিকতলায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৭ মিমি, কামডহরি এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ ২৪৫ মিমি। তপসিয়া, বালিগঞ্জ বৃষ্টির পরিমাণ ২৪০ মিমির ওপরে। উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি এলাকাও জল থৈ থৈ অবস্থা।