শারদীয় উৎসবের আমেজে যখন চারপাশ আনন্দে ভরপুর, তখন উত্তর আসানসোলের ধাদকার এলাকায় বাজিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়ল তুমুল অশান্তি। রবিবার গভীর রাতে দুই পরিবারের বচসা রীতিমতো মারপিটে পরিণত হয়। ঘটনায় গুরুতর আহত হন অন্তত পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: BJP কর্মীকে জুতোপেটা দলের কাউন্সিলরের, খড়গপুরে পদ্ম শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব!
স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, সিং পরিবারের অভিযোগ প্রতিবেশী যাদব পরিবারের শিশুরা তাঁদের বাড়ির সামনে বারবার বাজি ফাটাচ্ছিল। বারণ করা সত্ত্বেও বাজি ফাটানো বন্ধ হয়নি। উল্টে অভিযোগ ওঠে, যাদব পরিবারের প্রাপ্তবয়স্করা শিশুদের আরও বাজি দিয়ে উৎসাহিত করছিলেন। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সিং পরিবারের সদস্যরা। অন্যদিকে, যাদব পরিবারের দাবি, তাঁদের বাড়ির সামনে রাখা একটি ডিজেলচালিত গাড়ির নিচে বাজি ফাটানো হচ্ছিল। এতে গাড়িতে আগুন লাগার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় তাঁরা প্রতিবাদ জানান। এই নিয়েই শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়।
চোখের নিমেষে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। অভিযোগ, যাদব পরিবারের অন্তত কুড়িজন একযোগে সিং পরিবারের উপর চড়াও হয়। লাঠি ও রডের আঘাতে সিং পরিবারের কয়েকজন গুরুতর জখম হন। মাথা ফেটে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। অশান্তির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিং পরিবারের পক্ষ থেকে যাদব পরিবারের অন্তত ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর পর থেকেই পলাতক যাদব পরিবারের প্রায় সব পুরুষ সদস্য। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
তদন্তে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, বাজিকে কেন্দ্র করে শুরু হলেও ঘটনাটির মূলে রয়েছে জমিজমা সংক্রান্ত পুরনো বিবাদ। উৎসবের সময় সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে সেই অশান্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ফলে, পাড়ার শান্ত পরিবেশ মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসন যদি আগেভাগে হস্তক্ষেপ করত, তাহলে এত বড় অশান্তি এড়ানো যেত। আপাতত আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।