খড়গপুর শহরে প্রকাশ্যে বিজেপির অন্দরকলহের ছবি সামনে এল। দলেরই এক কর্মীকে জুতোপেটা করার অভিযোগ উঠল বিজেপির মহিলা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি সামনে আসতেই জেলাজুড়ে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও সেটির সত্যতা এখনও যাচাই হয়নি।
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির অন্তর্কলহে বিরক্ত মিঠুন, জেলা বৈঠক এড়াচ্ছেন ‘মহাগুরু’
অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন খড়গপুর পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মমতা দাস। অভিযোগ, শনিবার বিজেপির স্থানীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন সক্রিয় নেতা অশোক সিং। সেই সময় আচমকাই সেখানে ঢুকে পড়েন মমতা দাস। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তিনি অশোকের দিকে তেড়ে গিয়ে জুতো খুলে আঘাত করেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা যায়, বাধা দেওয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও অশোককে অন্তত দু’বার জুতো দিয়ে মারা হয়। অশোক সিংয়ের দাবি, পুরসভা ভোটে মমতা দাসকে জিততে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু, টাকার কারণে সেই কাউন্সিলর তাঁকে মারধর করেছেন। তিনি জানান, এক ওয়ার্ডবাসী দোকান বসানোর অনুমতি চাইছিলেন। শোনা গিয়েছিল, কাউন্সিলর ১০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। তিনি প্রতিবাদ করায় এই পরিণতি।
অন্যদিকে, পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন কাউন্সিলর মমতা দাস। তাঁর বক্তব্য, অশোক কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলে নেই। যেখানে যান, সেখান থেকেই বের করে দেওয়া হয়। ও একজন সমাজবিরোধী। বহু দিন ধরে তাঁকে গালাগাল করেছে, শারীরিক হেনস্থা করেছে। সেদিনও তাঁকেই আগে মারধর করে। তিনি শুধু প্রতিরোধ করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, বিজেপির ওই কার্যালয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ চলে।
ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক কটাক্ষ শুরু করেছে তৃণমূল। জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, বিজেপি মানেই তোলাবাজি। অশোক সিংয়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। আসলে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়েছে। বিজেপির এই চিত্র নতুন নয়। অন্যদিকে, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা অরূপ দাস জানিয়েছেন, ভিডিয়োটি তিনি দেখেছেন। ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। বিজেপি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলের নেতৃত্ব অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ঘটনার জেরে খড়গপুর শহরে শুধু বিজেপির ভেতরেই নয়, পুরো রাজনৈতিক মহলেই শুরু হয়েছে জল্পনা। নির্বাচনপূর্ব সময়ে দলের ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।