ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলকাতা। জায়গায় জায়গায় হাঁটু জল জমে। গাড়ি চলাচল করতে পারছে না বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। ট্রেন পরিষেবাও ব্যাহত। মানুষের বাড়িতে জল জমে গিয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এই আবহে কলকাতা নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে কলকাতা পুরসভা এই ক্ষেত্রে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের কয়েক ঘণ্টা লেগে যাবে। পুরসভার বক্তব্য, আর যদি এক ফোঁটাও বৃষ্টি না হয়, তাহলেও ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লাগবে জমা জল নামতে। (আরও পড়ুন: দুর্যোগের ঘন কালো মেঘে ঢাকা কলকাতার আকাশ, পরপর মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে)
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে শিয়ালদা থেকে বহু রুটে বন্ধ লোকাল, বাতিল ট্রেন, ব্যাহত মেট্রো চলাচল
কলকাতার পুরসভার মেয়র পরিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন. 'দুর্গাপুজোর সময় কলকাতা শহরে এমন বৃষ্টি হয়েছে এর আগে আমি কখনও দেখিনি। রাত থেকেই আমাদের সিস্টেম কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। বেশ কিছু গালিপিট ইতিমধ্যে কাজ করা শুরু করেছে। কিন্তু আবার এমন কিছু গালিপিট রয়েছে যেগুলো কাজ করানো যায়নি। ফলে জল নামতে একটু সময় লাগছে। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত লকগেট বন্ধ ছিল। সেই সময় পর্যন্ত আড়াইশো মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তাঁকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। যদিও ভোর ৫টায় সময় লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিকাশি বিভাগ কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু যদি আবার বৃষ্টি হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টি না হলেও শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও ১০ থেকে ১২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।'
এদিকে জানা গিয়েছে, গতরাতে কামডহরিতে(গড়িয়া) ৩৩২ মিলিমিটার, যোধপুর পার্কে ২৮৫ মিলিমিটার, কালিঘাটে ২৮০.২ মিলিমিটার, তপসিয়ায় ২৭৫ লিমিমিটার, বালিগঞ্জে ২৬৪ মিলিমিটার, চেতলায় ২৬২ মিলিমিটার, মোমিনপুরে ২৩৪ মিলিমিটার, কুদঘাটে ২০৩.৪ মিলিমিটার, পাগলাডাঙ্গায় (ট্যাংরা) ২০১ মিলিমিটার, কুলিয়ায় (ট্যাংরা) ১৯৬ মিলিমিটার, চিংড়িহাটায় ২৩৭ মিলিমিটার, পামার বাজারে ২১৭ মিলিমিটার, ধাপায় ২১২ মিলিমিটার, সিপিটি ক্যানেলে ২০৯.৪ মিলিমিটার, উল্টোডাঙ্গায় ২০৭ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়ায় ১৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
কলকাতা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতেও এই বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে। এদিকে আজও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭০ মিলিমিটার থেকে ২০০ মিলিমিটার) হতে পারে। তাই কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলিতে ভারী বৃষ্টি (৭০ মিলিমিটার থেকে ১১০ মিলিমিটার) হতে পারে। তাই ওই সাতটি জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।