দিল্লি বিমানবন্দরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আফগানিস্তানে তালিবান জমানা ফেরার সময় দেখা গিয়েছিল বিমানের চাকায় বসে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন আফগানরা। এবার সেই একই কায়দা রবিবার কাবুল থেকে কেএএম এয়ারের বিমানে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছল ১৩ বছরের এক আফগান কিশোর। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গেল বিমানবন্দরজুড়ে। টানা ৯৪ মিনিটের ফ্লাইটে কীভাবে বেঁচে রইল ওই কিশোর, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
আরও পড়ুন-কেরলে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! স্ত্রীকে একের পর এক কোপ, ফেসবুক লাইভে স্বামী....
জানা গেছে, কেএএম এয়ারের এয়ারবাস এ৩৪০ বিমানটি কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর থেকে টেক অফ করে রবিবার সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। এরপর বিমানটি দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-তে অবতরণ করে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। তারপরই ওই কিশোর বিমান থেকে নেমে মেইন লাউঞ্জে ঢোক সময়ে ধরা পড়ে যায়। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, কুর্তা পাজামা পড়া ওই আফগান কিশোর আসলে ইরান যেতে চেয়েছিল। ভুল করে সে দিল্লিগামী বিমানে উঠে পড়ে। বোর্ডিংয়ের সময়ে সে লুকিয়ে পেছনের চাকার উপরে উঠে বসে। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বিমানবন্দরের এক গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলার তাকে টার্মিনাল ৩ এর ট্যাক্সিওয়ের কাছে দেখে ফেলে। বিমান থেকে যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর থেকে সে চাকা থেকে নেমে রেস্ট্রিকটেড অ্যাপ্রন এরিয়ার দিকে হাঁটছিল। ওই দৃশ্য দেখেই ওই গ্রাউন্ড ওয়ার্কার খবর দেন নিরাপত্তারক্ষীদের। শেষপর্যন্ত সিআইএসএফ তাকে হেফাজতে নিয়ে এয়ারপোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
আরও পড়ুন-কেরলে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! স্ত্রীকে একের পর এক কোপ, ফেসবুক লাইভে স্বামী....
সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কিশোর জানায়, সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা। কৌতূহলবশত কাবুল বিমানবন্দরে ঢুকে বিমানের পেছনের ল্যান্ডিং গিয়ার কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়ে। তার কাছে একটি লাল রঙের ছোট স্পিকারও পাওয়া গিয়েছে। বিমানটিকে পরে তল্লাশি চালিয়ে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় কোন নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে একই বিমানে তাকে পুনরায় আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। এই ঘটনাটি কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছে, যা এখন তদন্তাধীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে এভাবে যারা বিমানে চেপে বসেন তাদের মধ্যে ৫ জনের মধ্যে ৪ জনেরই মৃত্যু হয়। ভারতের বিমানবন্দরে এমন ঘটনা দ্বিতীয়। ১৯৯৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রদীপ সাইনি (২২) এবং বিজয় সাইনি (১৯) নামে দুই ভাই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বোয়িং ৭৪৭ বিমানে দিল্লি থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় লুকিয়ে পড়ে। প্রদীপ বেঁচে গেলেও, বিমানটি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর বিজয়কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।