কথায় বলে, ভাগ্য ফিরতে সময় লাগে না। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার মহিলা শ্রমিক রচনা গোলদারের ক্ষেত্রে যেন অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হল সেই প্রবাদ। খনি থেকে মাটি খুঁড়তে গিয়ে তিনি খুঁজে পেলেন এক বা দুই নয় ৮টি বহুমূল্য হিরে। এইসব হিরের দাম একসঙ্গে কয়েক লক্ষ টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সরকারি আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, শনিবার পান্না জেলার স্থানীয় বাসিন্দা রচনা গোলদার (৫০) খনিতে খনন করার সময় আটটি মূল্যবান হিরে খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলির মোট ওজন ২.৫৩ ক্যারেট। এর মধ্যে ছয়'টি উচ্চমানের। হিরে বিশেষজ্ঞ অনুপম সিং বলেন, 'সবচেয়ে বড় হিরেটির ওজন ০.৭৯ ক্যারেট। এছাড়াও, দু'টি পাথর রঙহীন।' তিনি আরও জানান, রচনা গোলদার পাথরগুলি জেলা হিরে অফিসে জমা করেছেন, যেখান থেকে সেগুলি নিলামে তোলা হবে এবং সম্ভবত সেগুলির মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা হতে পারে। তিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের মা রচনা গোলদার হাজারা মুদ্দা এলাকায় একটি খনির ইজারা নিয়েছিলেন এবং খনন করার সময় পাথরগুলি খুঁজে পেয়েছিলেন। খনি শ্রমিক রচনার আশা, হিরে নিলামের অর্থ তাঁর আর্থিক অবস্থার উন্নতি করবে।
আরও পড়ুন-'পরনির্ভরতাই আসল শত্রু!' ট্রাম্পের শুল্ক-ভিসা নীতির পাল্টা 'মন্ত্র' প্রধানমন্ত্রী মোদীর
পান্নায়, আট মিটার লম্বা একটি খনি বার্ষিক ২০০ টাকায় লিজ দেওয়া হয়। এই খনি থেকে প্রাপ্ত হিরের নিলাম প্রতি তিন মাস অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের ব্যবসায়ীরাই এই নিলামে অংশগ্রহণ করেন। চূড়ান্ত নিলাম মূল্যের উপর ১২ শতাংশ সরকারি ছাড় প্রযোজ্য, যার মধ্যে ১১ শতাংশ রয়্যালটি এবং ১ শতাংশ টিডিএস অন্তর্ভুক্ত। বাকি পরিমাণ টাকার অঙ্ক দেওয়া হবে খনির সঙ্গে জড়িত হিরে আবিষ্কারককে।
আরও পড়ুন-'পরনির্ভরতাই আসল শত্রু!' ট্রাম্পের শুল্ক-ভিসা নীতির পাল্টা 'মন্ত্র' প্রধানমন্ত্রী মোদীর
তবে পান্নার রত্নগর্ভা মাটিতে এমন ভাগ্যবদলের ঘটনা এই প্রথম নয়। এই জেলা বরাবরই সাধারণ মানুষকে রাজা করে দেওয়ার জন্য পরিচিত। চলতি মাসেই পান্না জেলারই রাজপুর গ্রামের আদিবাসী মহিলা বিনীতা গোন্ডে খনি থেকে মাটি খুঁড়তে গিয়ে খুঁজে পান তিনটি বহুমূল্য হিরে। এর আনুমানিক বাজারমূল্য হতে পারে কয়েক লক্ষ টাকা। মাস দুয়েক আগে, গত জুলাই মাসেও এক শ্রমিক দম্পতির হিরে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। ছত্রপুর জেলার বাসিন্দা হরগোবিন্দ যাদব ও তাঁর স্ত্রী পবন দেবী যাদব একটি স্থানীয় খনি থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা মূল্যের অন্তত আটটি হিরে খুঁজে পেয়েছিলেন। রচনা গোলদার, বিনীতা গোন্ড এবং যাদব দম্পতির এই কাহিনি আরও একবার প্রমাণ করল, পান্নার মাটি আজও বহু সাধারণ মানুষের স্বপ্নকে সত্যি করার ক্ষমতা রাখে। একটি লিজ আর অক্লান্ত পরিশ্রম - এই দুইয়ের ভরসাতেই একদিন মাটির গভীর থেকে উঠে আসতে পারে চোখ ধাঁধানো হিরে, যা বদলে দিতে পারে গোটা জীবন।