তিন মাস আগেই যুযুধান দু’পক্ষের তরজায় সরগরম হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। বহু নাটকীয়তা, মতবিরোধ ও প্রকাশ্য বাকযুদ্ধের পর ফের একসঙ্গে দেখা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেসলা সিইও তথা মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ককে। রবিবার অ্যারিজোনার গ্লেনডেলে দক্ষিণপন্থী নেতা চার্লি কির্কের স্মরণসভায় পাশাপাশি বসে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে দেখা গিয়েছে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিকে। এরপরেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুনর্মিলন হয়ে গেল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন ধনকুবের?
আরও পড়ুন-H-1B-র পাল্টা 'K ভিসা!' US-কে ভুলিয়ে বিশ্বের মেধাবীদের টানতে চিনের নতুন অস্ত্র
গত রবিবার স্মরণসভার আয়োজনটি করা হয়েছিল সদ্য প্রয়াত ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক নেতা চার্লি কির্কের স্মরণে। রাজনৈতিক মহলের মতে, কির্কের মৃত্যুই হয়তো মাস্ক ও ট্রাম্পের পুরনো তিক্ততা ভুলিয়ে তাঁদের আবার কাছাকাছি এনে দিয়েছে। ইলন মাস্ক নিজেই এক্স হ্যান্ডলে ট্রাম্প এবং তাঁর একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, 'চার্লির জন্য।' স্টেডিয়ামে দু’জনকে পাশাপাশি চেয়ারে বসে পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে কথোপকথনে মগ্ন থাকতে দেখা যায়। মাঝে একবার মাস্ক খানিকটা ঝুঁকে ট্রাম্পের দিকে এগিয়েও যান, সেই মুহূর্তটি ধরা পড়েছে একাধিক ক্যামেরায়। তাঁদের মুখে ছিল পারস্পরিক বোঝাপড়ার ছবি। হোয়াইট হাউসের তরফে এক্স হ্যান্ডলেও ট্রাম্প এবং মাস্কের সাদাকালো ছবি পোস্ট করা হয়েছে। পিছন দিক থেকে তোলা সেই ছবিতে ট্রাম্প ও মাস্ককে ঘনিষ্ঠভাবে আলাপচারিতায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মাস্ক চেয়ার থেকে ওঠার সময় ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন এবং পিঠে আলতো করে চাপড় দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন-H-1B-র পাল্টা 'K ভিসা!' US-কে ভুলিয়ে বিশ্বের মেধাবীদের টানতে চিনের নতুন অস্ত্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে সক্রিয় প্রচারে শামিল হয়েছিলেন ইলন মাস্ক। মাস্ক ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারে ২৭০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ দান করেছিলেন। নির্বাচনের পরে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ‘ডিওজিই’ নামে একটি নতুন দফতর গঠন করে মাস্ককে প্রধানের দায়িত্ব দেন।এই সংস্থা মার্কিন ফেডারেল কর্মীবাহিনী ও এজেন্সিগুলির হাজারো পদ বিলুপ্ত করে, যেগুলিকে অপচয়, জালিয়াতি ও দুর্নীতির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে একমত হতে না পারায় মাস্ক পদত্যাগ করেন। এরপরেই শুরু হয় পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি। এক সময় মাস্ক ঘোষণা করেন, তিনি নিজেই রাজনৈতিক মঞ্চে নামবেন। নতুন দল গঠনের ইঙ্গিতও দেন। সেই মতো কাজও করেন।সেই টানাপড়েনের মধ্যেই মৃত্যু হয় চার্লি কির্কের। গত ১০ সেপ্টেম্বর এক জনসভায় গুলিতে নিহত হন কির্ক। তাঁর শোকসভার সূত্রেই আবার মুখোমুখি ট্রাম্প ও মাস্ক।বিশ্লেষকদের মতে, এটি নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ, নাকি ভবিষ্যতের কোনও বৃহত্তর রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত, তা সময়ই বলবে।