কয়েকদিন আগেই ভরসন্ধ্যায় গুলশান কলোনিতে বন্দুক উঁচিয়ে দৌড়তে দেখা গিয়েছিল দুষ্কৃতীদের। সেই ঘটনা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফিরোজ খান ওরফে মিনি ফিরোজ অবশেষে ধরল কলকাতা পুলিশ। এই দুষ্কৃতীকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের দল। ফিরোজের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের কাছে আজমেরি গেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গুলশানকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ফিরোজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিকই পোস্ট করে চলছিল। এমনই এক পোস্টে ফিরোজ দাবি করেছিল, গুলশান কলোনির গোটা ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। সেই সন্ধ্যায় ও রাতে যে গুলি চালানো হয়েছে বা বোমা যে মারা হয়েছিল, তা নাকি পুরোটাই 'সাজানো ঘটনা'। এরই সঙ্গে ফিরোজ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধেও। ভোটের সময় নাকি গুলশান কলোনির ভোট তৃণমূলের দিকে আনতে সুশান্ত এই ফিরোজকে দিয়ে 'কাজ করিয়েছিল'।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান কলোনির রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় দুষ্কৃতীরা। এলাকা দখল এবং অটো স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় ব্যাপক সংঘর্ষ। তুমুল বোমাবাজি এবং গুলি চলার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় আনন্দপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। গোটা এলাকায় ঘিরে ফেলা হয়। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরই লালবাজারের তরফে একাধিক দফায় তল্লাশি চালিয়ে প্রথমে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জেরা করেই উঠে আসে মহম্মদ আম্বারের নাম। এরপর তাকেও ঘরা হয়। তবে মূল অভিযুক্ত ফিরোজ এখনও অধরা। সেদিন অবশ্য ফিরোজ এলাকায় আসেনি বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে তার গোষ্ঠীর লোকজনই এই সব করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এদিকে পুলিশের কড়া অবস্থান সত্ত্বেও শহরে এভাবে দুষ্কৃতীদের দাপট নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনের দক্ষতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। তবে ২ দিন আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা আশ্বাস দিয়েছিলেন, খুব শিগগির অভিযুক্তরা ধরা পড়বে। এমন তেমনটাই হল।